আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ১৬, ২০২১, ০৯:৩৫ এএম
হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশে পলাতক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে দুদক।
অভিযোগ, পি কে হালদারের আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা তার অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন নারী সহযোগীর তথ্য পান। তাদের একজন অবন্তিকা।
জানা গেছে, পিকে হালদারের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের দিঘিরজান গ্রামে। অবন্তিকা বড়ালের বাড়িও পিরোজপুরে। এলাকার মেয়ে হিসেবে পি কে হালদারের সঙ্গে তার পরিচয়। এক পর্যায়ে ঘনিষ্ঠতা হয়।
ধানমণ্ডির যে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে অবন্তিকা থাকতেন সেটিও পি কে হালদারের কিনে দেয়া বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। পি কে হালদারের আরেক সহযোগী শঙ্খ বেপারীর নামে কেনা ওই ফ্ল্যাটটি পি কে হালদারের অর্থেই কেনা বলে দুদক সূত্র জানতে পারে।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, গত ৪ জানুয়ারি ওই শঙ্খ বেপারীকে আটক করার পরই অবন্তিকার বিষয়ে তথ্য বেরিয়ে আসে। এরপরই তার বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার বিষয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
সূত্র বলছে, পি কে হালদার, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগী অবন্তিকা বড়াল মিলে প্রথমে ‘সুখদা’ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ‘সুখদা’র শেয়ার দিয়ে খোলেন হাল ক্যাপিটাল। এই হালের পরিচালক হন প্রীতিশ ও তার স্ত্রী সুস্মিতা। আবার এই হালের ৯০ ভাগ শেয়ারের মালিক হন সুখদার পক্ষে প্রশান্তের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অবন্তিকা। হাল ক্যাপিটালের ৯০ ভাগ শেয়ারের মালিক থাকে হাল ক্যাপিটালের। বাকি ১০ ভাগ রাখা হয় হাল ক্যাপিটালের দুই কর্মচারীর নামে। তারাই হাল ক্যাপিটালের নামে আগে থেকে বিদ্যমান মাইক্রো টেকনোলজি নামে একটি কোম্পানির শেয়ার কেনেন। যার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটে।
প্রসঙ্গত, পিপলস লিজিংয় নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের প্রায় ৩ হাজার ৬শ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালে সরকারের শুদ্ধি অভিযানের পরপরই তার নাম আলোচনায় উঠে আসে। পরে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর নোটিশ দিয়েছিল দুদক। তার আগে ৩ অক্টোবর তার বিদেশ যাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন পি কে হালদার। পরে দেশে আসার কথা বলেও আর আসেননি। গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল।
সম্প্রতি দুদকের একজন আইনজীবীর বক্তব্যের জের ধরে আলোচনায় আসে পি কে হালদারের বান্ধবীদের বিষয়টি। তবে কোন বান্ধবীর ব্যাংক হিসাবে কতো টাকা তার নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি ওই আইনজীবী। গত বুধবার অবন্তিকাকে গ্রেপ্তারের পর নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
আমারসংবাদ/জেআই