জানুয়ারি ১৬, ২০২১, ০৭:০০ পিএম
অবৈধ দখলদারদের আতঙ্ক, নগরবাসীর বন্ধু- ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। যাকে আত্মপ্রত্যয়ী কর্মবীর হিসেবে সহজেই অভিহিত করা যায়। একটি সবুজ, চলমান, পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত শহর গড়তেও দৃঢ়প্রত্যয়ী মেয়র আতিকুল ইসলাম।
ঢাকা উত্তরের অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি নাগরিক জীবনে বিদ্যমান মশানিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সড়ক বাতি, রাস্তা-ঘাট ও নালা-খাল দখলমুক্তকরণসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, নারী ও শিশুর সমস্যাসহ বহুমুখী সমস্যা সমাধানের মধ্য দিয়ে সফলতার পথেই ডিএনসিসিকে নিয়ে যাচ্ছেন নগরবাসীর দোরগোড়ায়। তার সফল এবং সক্রিয় নেতৃত্বেই নাগরিকদের স্বার্থরক্ষায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ডিএনসিসি।
শুধু তাই নয়, সার্বিক কর্মকাণ্ডে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যেও সম্প্রতি ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ চালু করেন তিনি। যা নগরবাসীর কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসাও কুড়ায়। তিনি নিজেও জবাবদিহিতার মধ্যে থেকে যেমন কাজ করতে চান তেমনি ডিএনসিসির কাউন্সিলর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও জবাবদিহিতার মধ্যে আনার বিষয়টিও এই অ্যাপের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন তিনি।
এছাড়াও এই অ্যাপ নাগরিক ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সংযোগ তৈরি করবে বলেও আশাবাদী মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এদিকে সম্প্রতি ওয়াসার দায়িত্বে থাকা ঢাকার ২৬টি খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় দুই সিটি কর্পোরেশন। দায়িত্ব পেয়েই ঢাকা উত্তর সিটির আওতায় পড়া খালগুলোকে পরিষ্কার করে আগের মতো পানির গতি ফিরিয়ে আনবেন বলে জানান মেয়র আতিক।
এছাড়া খালের দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাল পুনঃখনন করে পানিধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ পাড় বাঁধাই করে সবুজায়ন, ওয়াকওয়ে (হাঁটার পথ) এবং সাইকেল লেন তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি। যেই কথা সেই কাজ, খালের দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার পরই রাজধানীর ইব্রাহিমপুর খাল পরিষ্কার ও খালের পাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় ডিএনসিসি। মেয়র আতিক নিজেই অভিযানস্থল পরিদর্শন করেন এবং উচ্ছেদ এলাকা ঘুরে সার্বিক পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণ করেন।
সে সময় তিনি বলেন, খালের দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরই খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদে আমরা কাজ শুরু করেছি। যত প্রভাবশালী হোক না কেন খাল দখলদার কেউই ছাড় পাবে না। খাল পাড়ের সব বহুতল ভবনও ভেঙে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আর কথার সঙ্গে কাজের বাস্তবতায় উচ্ছ্বসিত নগরবাসীও সাধুবাদ জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলামকে।
এদিকে রিকশা গ্যারেজ, ক্লাব ঘর, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, নার্সারিসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলে ডিএনসিসি এলাকার বনানী পূজা মাঠ, বনানী সি ব্লক পার্ক, মোহাম্মদপুর ত্রিকোণ পার্ক, শিয়া মসজিদ পার্ক এবং মোহাম্মদপুর উদয়াচল পাক দখলে রাখে প্রভাবশালীরা। দীর্ঘদিন ধরে এসব পার্ক ও খেলার মাঠ অবৈধ দখলে থাকায় এগুলোর আধুনিকায়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছিল এবং এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রচারিত হয়।
বনানী পূজা মাঠে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, বনানী সি ব্লক পার্কে অবৈধভাবে ডেসকোর পরিত্যক্ত সাবস্টেশন ও অফিস রুম এবং বনানী সোসাইটির গার্ড শেড স্থাপন, মোহাম্মদপুর ত্রিকোণ পার্কে অবৈধভাবে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, রিকশা গ্যারেজ ও নার্সারি স্থাপন, শিয়া মসজিদ পার্কে অবৈধভাবে একটি ক্লাব ঘর, টং দোকান, রিকশা গ্যারেজ স্থাপন করে প্রভাবশালীরা।
সেখানে প্রভাবশালীদের প্রভাব উপেক্ষা করেই মেয়র আতিক অবৈধভাবে নির্মাণ করা এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। পর্যায়ক্রমে মেয়র আতিকের নেতৃত্বে খালপাড় ও ঢাকা উত্তরের ফুটপাতসহ সব জায়গাতেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে মেয়র আতিকের নেতৃত্বাধীন ডিএনসিসি নগরবাসীকে উপহার দেয় ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ। ঘরে বসেই যে অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ জানিয়ে কর্পোরেশনের সেবা নিতে পারবেন।
মশানিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সড়ক বাতি, রাস্তা-ঘাট ও নালা-খাল দখলমুক্তকরণসহ অবৈধ স্থাপনা সরানো, জলাবদ্ধতা ?দূরীকরণ, নারী ও শিশু সমস্যাসহ নগরবাসীর শতভাগ স্বার্থরক্ষায় তথ্য পাওয়া মাত্রই ত্বরিতগতিতে কাজ করবে ডিএনসিসি।
এছাড়া করোনাকালীন সময়েও খাল-নালা ব্যবস্থাপনা ও মশা নিয়ন্ত্রণে নিরলস কাজ করেছে ডিএনসিসি। আগে যেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেখানে বিভিন্ন ম্যাথডিকেল প্রসেস আমলে নেয়ায় মশা যেমন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তেমনি কমেছে মৃত্যুও। বর্তমানে মশা নিয়ন্ত্রণে বা কোথাও মশার উপদ্রব বাড়লেই সবার ঢাকা অ্যাপের মাধ্যমে জানামাত্রই ডিএনসিসি তা দমনে কাজ করবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে ‘স্মার্ট সিটি’ করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও কাজ করে যাচ্ছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। জানা গেছে, ডিএনসিসির প্রতিটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাকে ফেস রিকগনিশন সফটওয়্যারের আওতায় আনা হবে। সংরক্ষিত থাকবে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় চিহ্নিত দুষ্কৃতকারী, মাদক ব্যবসায়ী ও জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ডেটা।
আর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা সিটি কর্পোরেশনে ক্যামেরার নজরে আসামাত্রই কন্ট্রোলরুমে এলার্ট হবে। পাশাপাশি পুলিশের ডেটা স্টোরেজের সঙ্গেও এটিকে ইন্টিগ্রেট করা হবে। এর মধ্য দিয়েই নগরবাসী পাবে একটি সেইফ স্মার্ট সিটি।
সবশেষ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ঢাকা অ্যাপ উদ্বোধনকালে মেয়র আতিক বলেন, প্রত্যাবর্তন দিবসে জাতির জনক আগে তার সহধর্মিণীকে দেখার জন্য বাসায় যাননি। উনি সোজা চলে আসছিলেন রেসকোর্স ময়দানে, তার সহধর্মিণী সেটি রেডিওতে শুনছিলেন।
তিনি কীভাবে দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন, আর আমরা সেটি অনুসরণ না করে কীভাবে রাস্তা-ঘাট, নদী-নালা, খাল সব দখল করে নিচ্ছি। আমি একটি মেসেজ দিতে চাই, যারা অবৈধভাবে খালের দুই পাশ দখল করেছেন, অবৈধভাবে যারা রাস্তা দখল করেছেন, নিজেদের উদ্যোগে সরে যান। অবৈধদের জন্য আমরা কোনো বৈধ চিঠি পাঠাবো না। আজকে অবৈধরা কেন যেনো শক্তিশালী হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেভাবে জিরো টলারেন্স, সেভাবে উত্তর সিটিতেও কোনো ধরনের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।
নগরবাসীর জন্য ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ উপহার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অ্যাপ নাগরিক ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্য সংযোগ তৈরি করবে।
নাগরিকরা এই অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের সমস্যা জানাতে পারবেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিটি কর্পোরেশন সাড়া দেবে। আমরা মনে করি, এই অ্যাপ আমাদের জবাবদিহিতা ও দায়িত্বানুভূতির জায়গা সুদৃঢ় হবে।
আমারসংবাদ/এআই