Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪,

কামারুজ্জামানের সঙ্গে শনিবার পরিবারের সদস্যরা দেখা করবে

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫, ১১:৪৯ এএম


কামারুজ্জামানের সঙ্গে শনিবার পরিবারের সদস্যরা দেখা করবে

 

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে শনিবার তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে।  

জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের ছেলে হাসান ইকবাল শুক্রবার বলেন, “আমরা আজ দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আইনজীবীরা আমাদের বলেছেন, শনিবার তারা সাক্ষাত করার পর আমাদের দেখা করতে।”

বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে তা পড়ে শোনানো হলেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কারা কর্তৃপক্ষ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে হাসান ইকবাল জানান।

তিনি বলেন, “প্রতিমাসে একবার আমরা বাবার সাথে দেখা করি। গত ৩১ জানুয়ারি দেখা করেছিলাম। সে অনুযায়ী ২৮ ফেরুয়ারি সাক্ষাতের কথা ছিল।”
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী জানান, কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাক্ষাতের জন্য মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তারা কোনো লিখিত আবেদন করেননি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর তিন বিচারক বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানায় সই করলে নিয়ম অনুযায়ী তা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া।

কারাগারে পৌঁছানোর পর তা ফাঁসির আসামি কামারুজ্জামানকে সেই পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয় বলে ফরমান আলী জানান। তিনি বলেন, “পরোয়ানা আসার পর কামারুজ্জামান আইনজীবীদের সাথেই প্রথমে দেখা করতে চেয়েছেন।”

পরোয়ানা জারি হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, “এখন কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝোলানোর সব প্রক্রিয়া সরকারকে এগিয়ে নিতে হবে। তবে উচ্চ আদালত যদি এই প্রক্রিয়া স্থগিত করতে বলে সেক্ষেত্রে তা স্থগিত থাকবে।”

কামারুজ্জামান সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন ১৫ দিনের মধ্যে, যে দিন গণনা বুধবার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের সময় থেকেই শুরু হয়ে গেছে।তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের সত্যায়িত কপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তারা রিভিউ আবেদন করবেন।

উল্লেখ্য গত বছরের ৩ নভেম্বর কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর দেওয়া ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় সংক্ষিপ্ত আকারে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

২০১৩ সালের ৯ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের আলবদর কমান্ডার কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ৬ জুন রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন তিনি।
 
২০১০ সালের ১৩ জুলাই জামায়াতের এই শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে। পরে ২ আগস্ট একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে।
 
একাত্তরে ময়মনসিংহের আল-বদর প্রধান কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্মান্তকরণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাজা দেয়া হয়। এর মধ্যে ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। অন্য দুটি অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরেকটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।