Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

যেখানে হলো দেওয়ানবাগী পীরের দাফন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ২৯, ২০২০, ০৭:৪৫ পিএম


যেখানে হলো দেওয়ানবাগী পীরের দাফন

দেওয়ানবাগ শরিফের পীর সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগীকে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছনে বাবে মদিনা দেওয়ানবাগ শরিফে তার স্ত্রীর পাশে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে একই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে আরামবাগে বাবে রহমতে তার নামাজে জানাজা হয়। 

এসময় মুক্তিযুদ্ধের ৩ নম্বর সেক্টরে অংশগ্রহণ করায় জানাজার পর তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

তারও আগে, সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ৪৮ মিনিটে মারা যান দেওয়ানবাগী পীর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

এদিকে নামাজে জানাজায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক ভক্ত ও মুরিদ ভিড় জমান আরামবাগ দরবার শরিফে। দুপুর আড়াইটার দিকে আরামবাগ দরবার শরিফের পাশের সড়কে জানাজা হয়। এতে বিপুলসংখ্যক মুসল্লিরা অংশ নেন। 

জানাজার আগে পীর দেওয়ানবাগীর ওছিয়ত অনুযায়ী ছেলেদের দরবারের ইমাম করার ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় ভক্তদের মধ্যে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানেই তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। 

এরপর দেওয়ানবাগীর লাশ একটি ফুল সজ্জিত ট্রাকে মতিঝিলের বাবে মদিনায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এই প্রসঙ্গে দেওয়ানবাগ শরিফের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, ‘ওনার (দেওয়ানবাগী) চার ছেলেকে দরবার শরিফের ইমাম করা হয়েছে। তবে মেজ ছেলে সৈয়দ ইমাম ড. আফছান কুদরত-ই খুদার নেতৃত্বে তারা চলবেন।

প্রসঙ্গত, দেওয়ানবাগীর স্ত্রী ২০০৯ সালে মারা যান। তাকে বাবে মদিনায় দাফন করা হয়, ওছিয়ত অনুযায়ী দেওয়ানবাগীকেও তার স্ত্রীর পাশে দাফন করা হয়েছে। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় জানাজার পর জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গার্ড অব অনার দেয়া হয়েছে।

দেওয়ানবাগ শরীফের পরিচালক ড. আরসাম কুদরত এ খোদার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে দেওয়ানবাগী ৩ নম্বর সেক্টরের প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন এবং যুদ্ধ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর ১৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টে রিলিজিয়াস টিচার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারের জন্য সর্বমোট ১১টি দরবার শরীফ, শতাধিক খানকাহ্ শরীফ ও সহস্রাধিক আশেকে রাসুল জাকের মজলিস প্রতিষ্ঠা করেন। জানাজা ও গার্ড অব অনার প্রদানের কার্যক্রমটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে হুজুর কেবলাজানের লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুল ভক্ত মুরিদ সন্তান লাইভ প্রোগ্রামে দেখার সুযোগ পান।

দেওয়ানবাগী পীর সৈয়দ মাহবুব ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার। মা সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নিজ এলাকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

এরপর ফরিদপুরে চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমেদ চন্দ্রপুরীর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন দেওয়ানবাগী পীর। তারপর ওই পীরের মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন দেওয়ানবাগী। এর সুবাদে শ্বশুরের কাছ থেকে খিলাফত লাভ করেন। 

এদিকে দেওয়ানবাগী বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট ১১টি দরবার ও শতাধিক খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন।

আমারসংবাদ/জেডআই