রাজধানীর ওয়ারী থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল মেহবুব মিজুকে বাসায় না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা মো. মিল্লাত হোসেনকে (৬৫) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে ফয়সালকে না পেয়ে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার বৃদ্ধ বাবা মিল্লাত হোসেনের (৬৭) মাথায় আঘাত করা হলে মারাত্মক আহত হন তিনি। তাকে স্থানীয় আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজধানীর ওয়ারী থানার ৩০নং গোপী মোহন বসাক লেনের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত ১২টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত স্লোগান দিতে দিতে ওই বাসার দিকে যায়। কিছুক্ষণ পরই চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ শোনা যায়। পরে এলাকাবাসী ওই বাসায় গিয়ে মিল্লাত হোসেনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতারা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন নিহত মো. মিল্লাত হোসেনের ছেলে ফয়সাল মেহবুব মিজু।
তিনি বলেন, বুধবার রাত ১২টার পর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এ হামলা চালানো হয়। প্রায় অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগের লোক আমাকে মারার জন্য আমার বাসায় যায়। কিন্তু তারা আমাকে না পেয়ে আমার বাসায় ভাঙচুর চালায়। তারা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমার বাবাকে কিছু একটা দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করেছে। ফলে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। রক্তে পুরো ঘর ভেসে গেছে। আমার বাবা একজন সাধারণ নিরপরাধ মানুষ। কখনো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না।
এ সময় তার এক চাচাকেও তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন যুবদলের সাবেক এ নেতা। তিনি বলেন, তার এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার হয়ে তার বাবা মারা গেছে দাবি করে তিনি বলেন, জানি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার পাব না। তবু আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই। যারা আমার নিরপরাধ বয়স্ক বাবাকে হত্যা করেছে, এ দুনিয়ায় বিচার না পাইলে আল্লাহ একজন আছেন, তিনি অবশ্যই শেষ বিচার করবেন। কী দেশে আছি, মধ্যরাতে কেউ কারও বাসায় গিয়ে এভাবে হামলা চালায়? মানুষ খুন করে? আমাদের কি সুষ্ঠু সুন্দরভাবে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার বা রাজনীতি করার অধিকার নেই?
তবে এ বিষয়ে ওয়ারী থানার ওসি কবির হোসেন হাওলাদার বলেন, রাতে ওয়ারী এলাকার অজ্ঞাত কতিপয় ব্যক্তি ওই বাসায় গিয়ে ওই বৃদ্ধের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। তিনি তিন বছর থেকে কার্ডিয়াক রোগী ছিলেন। ঘটনার সময় উত্তেজিত হয়ে পড়ে গিয়ে আহত হন। তার ছেলে ও ছেলের বউ এ বিষয়ে থানায় লিখিত দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
টিএইচ