স্কুলছাত্রী জেসিকা মাহমুদ (১৬) ওরফে জেসি হত্যা মামলার প্রধান আসামি প্রেমিক বিজয় রহমানকে (১৯) রাজধানীর ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) র্যাব মিডিয়া সেন্টার কারওয়ানবাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখা পরিচালক পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত বিজয় ২০১৯ সালে একই স্কুলে পড়ুয়া অপর আসামি আদিবা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। আদিবার সঙ্গে সম্পর্ক চলাকালীন বিজয় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ভিকটিম জেসিকার সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক করে। বিজয় উভয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক বজায় রেখে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অপর আসামি আদিবার সঙ্গে গোপনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এতে বাগড়া দেয় প্রেমিকা জেসি। বিজয়ের সাথে তার বিভিন্ন কথোপকথনের স্ক্রীনশর্ট মেসেঞ্জারে পাঠায়। বিষয়টি নিয়ে গ্রেপ্তারকৃত বিজয় ও অপর আসামি আদিবার মাঝে বিভিন্ন সময় কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া-বিবাদ হলে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে বিজয় জানায়, বিষয়টির মীমাংসার কথা বলে স্ত্রী আবিদার সহযোগিতায় ১ জানুয়ারি ২০২৩ সালে বিজয়ের বাসার ছাদে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে জেসিকে হত্যা করা হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৩ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের কোর্টগাঁও এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্কুলছাত্রী জেসিকা হত্যার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্বজনরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর র্যাব ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে জেসি হত্যার আসামি বিজয় রহমানকে (১৯) গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিজয় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য স্বীকার করেছেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত বিজয় মুন্সীগঞ্জের একটি কলেজ থেকে ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সে জেসি হত্যার পর থেকে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান এলাকায় তার বন্ধুর বাড়িতে ৪ দিন আত্মগোপনে থাকে। সেখানে সে নিজেকে নিরাপদ মনে না করে পরবর্তীতে ফরিদপুরের একটি মাজারে ছদ্মবেশে ২২ দিন আত্মগোপনে থাকে। একপর্যায়ে তার সন্দেহ জাগে যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তারের লক্ষে এখানে অভিযান চালাতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকে সে ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাসায় এসে আত্মগোপনে থাকে। এরপর গত রাতে রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় আত্মগোপনে থাকাকালীন র্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত বিজয় বর্ণিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। গ্রেপ্তারকৃত এ প্রধান আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
কেএস