রাজধানীতে রেলের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৪:২৪ পিএম

রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে রেলের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতা উত্তম দাসসহ ৪ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুটি পৃথক অভিযান চালিয়ে কমলাপুর এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার ( ৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব-৩ টিকাটুলি অফিসে প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান, র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতা উত্তম দাস, তার সহযোগী মো. ইলিয়াস(৫৯), মো. শাহ আলম(৩৪), মো. খোকন মিয়া (৫৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫৬ আসন বিশিষ্ট ৪২টি টিকিট ও ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজধানীর কমলাপুর এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনসহ সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন রেলস্টেশনে অধিক মুনাফার আশায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের তৎপরতা চালিয়ে আসছে।

কমলাপুর রেলস্টেশনে এই কালোবাজারি চক্রটির অন্যতম মূলহোতা উত্তম দাস ও তার সদস্যরা মিলে লাইনে দাঁড়িয়ে এক একটি এনআইডি ব্যবহার করে টিকিট সংগ্রহ করে।

এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও মুঠোফোন নাম্বার ব্যবহার করেও টিকিট সংগ্রহ করে থাকে। এরপর উত্তম দাসের নেতৃত্বে এক একটি ট্রেন ছাড়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আগে থেকে তারা অধিক মূল্যে টিকিট বিক্রির তৎপরতা শুরু করে।

তিনি বলেন, ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনাতে থাকে তাদের মজুদকৃত কালোবাজারি টিকিটের দাম তত বাড়তে থাকে। তারা সাধারণত দিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রি করে থাকে।

সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে তারা টিকিটের দাম আরও বাড়িয়ে দেয়। এই চক্রটি মূলত সোনার বাংলা, কালনী এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিথা, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, তিস্তা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেস এই সকল ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে থাকে। এই চক্রটির আরও সদস্য ইউনিট রয়েছে।

প্রতিটি ইউনিটে ৫ থেকে ৭ জন করে সক্রিয় সদস্য রয়েছে; যারা তাদের টার্গেটকৃত ট্রেনসমূহের টিকিট কালোবাজারি করে সাধারণ যাত্রীদের নিকট চড়াদামে বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত চক্রের মূলহোতা উত্তম দাস নিজ জেলা কুমিল্লার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পরিচয় ব্যবহার করে এবং রেলস্টেশনে কর্মরত অসাধু একটি চক্রের যোগসাজসে ২০১৮ সাল থেকে টিকিট কালোবাজারির ব্যবসা শুরু করে। সে মূলত নিজে টিকিট কাটার কাজ না করে তার অধিনস্ত অপরাপর ৪ থেকে ৫ জন কর্মী দ্বারা বিভিন্ন মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ পূর্বক চড়ামূল্যে বিক্রি করে থাকে।

উল্লেখ্য, উত্তম দাস বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা খেটে জামিনে মুক্ত হয়। জামিনে মুক্ত হয়ে সে পুনরায় একই পেশায় নিয়োজিত হয়।

র‌্যাব-৩ এর এ অধিনায়ক আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত উত্তম দাসের নেতৃত্বে এবং রেল কর্তৃপক্ষের একটি অসাধু চক্রের মাধ্যমে ঢাকা শহরে টিকিট কালোবাজারীর একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা দেশব্যাপী টিকিট কালোবাজারীর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।