ভূয়া গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস নাহিদ (ডলার) গ্রেপ্তার। এ পরিচয়ে তল্লাসী, শ্লীলতাহানি, লুটের চেষ্টাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুয়া পরিচয়ে অভিযানের নামে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী আত্মসাতের মূলহোতা ছিলেন তিনি। গতকাল রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে ডলার নাহিদকে(৩০) গ্রেপ্তার করছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (২৩) ফেব্রুয়ারি দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টার কাওরান বাজার থেকে এ তথ্য জানান, র্যাবের মিডিয়া শাখার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, গত ২৫ জানুয়ারি রাতে সুনামগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন নারায়নতলা গ্রামের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে কিছু দুস্কৃতিকারী গোয়েন্দা সংস্থার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোকসেদ আলীর বাড়ি ও তার আশেপাশের কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানের নামে তারা বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট চালায় এবং তল্লাসীর নামে বেআইনীভাবে গৃহবধূর শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটায়।
তিনি জানান, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে একজন ভিকটিম বাদি হয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট থানা আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাবের সহায়তা চাইলে র্যাব বর্ণিত মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
খন্দকার আল মঈন আরও জানান, এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি র্যাব-৪ এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি বিজন রায়কে মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। এবং তার মাধ্যমেই আমরা জানতে পারি সুনামগঞ্জের বর্ণিত এলাকার বিভিন্ন বাড়িসহ বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মিথ্যা পরিচয় দিয়ে লুটপাট এবং চাঁদাবাজির মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল কুদ্দুস ডলার নাহিদ। এবং নাহিদ বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
তিনি আরও জানান, ডলার নাহিদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে নিজেকে ১৯৯৬ সালের এসএসসি ব্যাচ দাবি করে এবং বিভিন্ন কৌশলে উক্ত ব্যাচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গ্রুপে যুক্ত হয়ে নিজেকে গোয়েন্দা শাখা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির টাকা, জমি ও ফ্ল্যাট উদ্ধারের নামে প্রতারণা করত। এবং ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করে তাদের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে প্রতারণার করত।
উল্লেখ্য যে, সে গত ৫ থেকে ৬ বছর যাবত ঢাকা ও পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গোয়েন্দা সংস্থার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে ভূয়া পরিচয় দিয়ে অভিযানের নামে বিভিন্ন বাড়ি হতে নগদ অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করেছে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ইতোপূর্বে সে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মিথ্যা পরিচয় দিয়ে হুমকি প্রদানকালে র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে বেশ কিছুদিন কারাভোগ করে।
এআরএস