বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ড

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ২০ লাখ টাকা সহায়তা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠির

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৩, ০৩:১৪ পিএম

রাজধানীর বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ২০ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন। নিজেরা ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা না করে সেই টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য অনুদান হিসেবে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বঙ্গবাজারে পুড়ে যাওয়া মার্কেটস্থলে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা প্রদান করা হয়। এবারই প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এভাবে সহায়তা করা হচ্ছে।

দোকান মালিক সমিতি ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, আজ তারা বিভিন্ন মহল থেকে অর্থ সহায়তা পেয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে আনন্দদায়ক বিষয়টি হলো, তাদের সহায়তায় ২০ লাখ টাকা দিয়ে এগিয়ে এসেছেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা।

বাংলাদেশ হিজড়া উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশ্মির দিপালী বলেন, গত ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে আমরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলেছি। আজ তাদের বিপদের মুহূর্তে আমরা ঈদের কেনাকাটা না করে ব্যবসায়ী ভাইদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। সারাদেশ থেকে আমরা ২০ লাখ টাকা তুলেছি। সেই টাকা আজ তাদের কাছে দিতে এসেছি। তারা বেঁচে থাকলে আমরাও বেঁচে থাকব।

তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের গুরু মা রাখি শেখ বলেন, আমরা মানুষের কাছ থেকে টাকা উঠিয়ে এই টাকা জমিয়েছি। এখন আমরা সেটা মানবতার কল্যাণেই দিয়ে দেব। এই টাকার পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা তহবিলে জমা দেওয়া হবে। সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের হাতে হাতে এই টাকা পৌঁছানো হবে।

এই অনুদান হস্তান্তরকালে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের গুরু মায়েরা আসেন। এসময় তৃতীয় লিঙ্গের প্রায় শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, হজ্বের জন্য দুই লাখ টাকা জমিয়েছিলেন রাজধানীর উত্তরা এলাকার তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের সর্দারনী আলেয়া। বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দুর্দশা দেখে এবার হজ্ব না করে সেই দুই লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আজ সবচেয়ে আনন্দদায়ক বিষয়টি হলো তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন। এটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে মানবতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। এ কারণে আমরা ব্যবসায়ী ভাইদের অনুরোধ করব, তাদের যেন কেউ কখনো অবহেলার চোখে না দেখে। এখন থেকে আমরা এই জনগোষ্ঠীকে শ্রদ্ধার চোখে দেখব।

আরএস