রেল চলাচল শুরু

পাঁচ ঘণ্টা পর রেললাইন ছাড়লেন অবরোধকারীরা

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৩, ০৩:৩৮ পিএম

চাকরি স্থায়ীকরণ ও আউটসোর্সিংয়ের প্রতিবাদে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরোধের পর অবশেষে আলোচনার আশ্বাসে রেললাইন থেকে সরলেন আন্দোলনরত শ্রমিকরা।

রোববার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে কারওয়ান বাজার সংলগ্ন এফডিসি রেলক্রসিং থেকে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। 

দুপুরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের আশ্বাস দিলে তারা রেলপথ থেকে সরে দাঁড়ায়। এসময় তেজগাঁও জোন পুলিশের এডিসি হাফিজ আল ফারুকও উপস্থিত ছিলেন।

পরে এ সময় জিএম জাহাঙ্গীর শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে হেঁটে রেল ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

শ্রমিকদের আশ্বস্ত করতে গিয়ে জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল জুন মাসের পর আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার। সেই আউটসোর্সিং কোম্পানির জন্য টেন্ডার ডকুমেন্টে আমরা শর্ত দিয়ে দিয়েছি আমরা অভিজ্ঞ লোক চাই। আপনারা যারা এখানে আন্দোলন করছেন তাদের আমরা অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট দেব। একই সঙ্গে আমরা আউটসোর্সিং কোম্পানিকে বলব যেন আপনাদের তারা নিয়োগ দেয়। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আমরা আপনাদের রেলওয়েতে নিয়োগ দেব, এটা আমাদের ইচ্ছা ও বাসনা।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করব আপনারা ট্রেন আটকে দিয়ে মানুষকে হয়রানি করছেন সেখান থেকে সরে আসবেন। আমরা আইনের ভেতর থেকে আপনাদের সর্বোত্তম সহযোগিতা করব।

এডিসি হাফিজ আল ফারুক শ্রমিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, আপনাদের (আন্দোলনকারী) সঙ্গে কথা বলতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম এখানে এসেছেন। তিনি বলেছেন, রেলে আউটসোর্সিংয়ে লোকবল নিয়োগের সময় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য দেবেন। পাশাপাশি আগে যারা অস্থায়ীভাবে চাকরি করতেন তাদেরও অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের অফিসে বসে করতে হবে। এটা রেল লাইনে বসে করার জিনিস নয়।

তিনি আরও বলেন, আজকে আপনারা যে সকাল থেকে রেল লাইনটা বন্ধ করে রেখেছেন, এখানে একজন মুমূর্ষ রোগী থাকতে পারে, একজন চাকরিজীবী থাকতে পারে। মানুষের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আমরা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনাদের বসতে দেব। এরপর আমাদের যেকোনো ভাবেই হোক আপনাদের সরাতে হবে। তাই এখানে আন্দোলন না করে, আপনারা আলোচনা করুন।

পরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম রেল ভবনের উদ্দেশ্যে যান ।

রোববার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে তারা রেলপথ ছেড়ে দেয়। এর আগে সকাল ১০টায় তারা রাজধানীর এফডিসি রেলক্রসিং এলাকায় রেলপথ অবরোধ শুরু করেন।

এর আগে, সকাল ১০টার দিকে বিএফডিসি রেলগেট এলাকায় রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা। এসময় তিতাস কমিউটার ট্রেন আটকে দেন তারা।

মূলত বাংলাদেশে রেলেওয়ের নিয়োগ পাওয়া অস্থায়ী শ্রমিকদের (টিএলআর) চাকরি ফেরত দেওয়া, স্থায়ীকরণ, আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল করা এবং নিয়োগবিধি ২০২০ সংশোধন করে আগের মতো ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের যোগ্যতা ৮ম শ্রেণি পাস বহাল রাখার দাবিতে ট্রেন আটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন অস্থায়ী শ্রমিকরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা শ্রমিকরা বলেছেন, আমরা বারবার রেল ভবনে স্মারকলিপি দিয়েছি। তারা আমাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিকার না পাওয়া পর্যন্ত রেললাইন ছাড়ব না।

আরএস