ইয়াবার চালান, চার চাকমাসহ গ্রেপ্তার ৯

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৪, ০৫:৪৯ পিএম

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও সায়দাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা পরিবহনের সময়ে চার চাকমাসহ ৯ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি) মেট্রো উত্তর কার্যালয়।

ডিএনসি বলছে, মাদক কারবারিরা মাদক পাচারের নিত্য নতুন কৌশল হিসেবে চাকমাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন কি তারা কক্সবাজার থেকে মাদক সংগ্রহ করলেও পাহাড়ি দূর্গম রুট ব্যবহার করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদক সরবরাহ করে আসছে।
গ্রেফতাররা হলো- ওমং তইন চাকমা(৪০), পাইয়াদীবী চাকমা (১৯), বামাংথাই চাকমা (২৯), কেরামা চাকমা (৩৫)। তারা সবাই কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার বাসিন্দা। এছাড়া অন্য কারবারিরা হলো- মো. আলী হায়দার রাববী (২৭), মুমিনা খাতুন (৪৪), মো. দিদার হোসেন (২৫), মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৪), মো. মনির হোসেন (২৩), গতকাল রবিবার থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ধারাবাহিক পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪১ হাজার ৯০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। মাদক পরিবহনে একটি কার্ভাড ভ্যান জব্দ করা হয়।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিএনসি মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিলো কক্সবাজার থেকে সংগ্রহ করা ইয়াবার একাধিক চালান বান্দরবান, রাঙ্গামাটি হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রবেশ করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিএনসির একাধিক সার্কেলের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ও সায়দাবাদ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। পৃথক অভিযানে চাকমা জনগোষ্ঠীর চারজনসহ ৯জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে তল্লাশী চালিয়ে প্রায় ৪২ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার মাদক কারবারিদের বরাত দিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, মূলত পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে তারা ইয়াবার চালান সংগ্রহ করে। এরপর ঢাকা ও এর পাশ্বর্তী বিভিন্ন জেলা সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিলো। গ্রেফতার চাকমারা মাদক পাচারের নতুন রুট রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান কেন্দ্রীক একটি মাদক সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য। ঢাকার একটি মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে আতাত করে তারা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল। তাদের কাছ থেকে ৯ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

পৃথক অভিযানে গ্রেফতার মুমিনা খাতুন  ও মোঃ আলী হায়দার রাববী জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে,  তারা যশোর কেন্দ্রীক একটি ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্য। সম্পর্কে তারা দুজন মামি ও ভাগ্নে। কক্সবাজার থেকে ইয়াবা পরিবহনের জন্য তারা বিলাস এসি বাস ব্যবহার করে। ভাগ্নে রাব্বি আগের বাসে এসে ক্লিয়ারেন্স দেয় পেছনে মামি পরিবারের সদস্য নিয়ে ভ্রমণ করার কৌশলে মাদক পরিবহন করে। তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারা টেকনাফ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে যশোরে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করতো।  জিজ্ঞাসাবাদে এই সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্যের নাম পাওয়া গেছে। যাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান।

অপর আরেক অভিযানে মো. দিদার হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, ও মো. মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই পেশায় ট্রাক চালক। তারা গাড়ী চালানোর আড়ালে তারা ইয়াবা পরিবহন করতো। ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে তারা ঢাকায় প্রবেশ করবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাভার্ডভ্যানসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২৮ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবা গ্রেফতার করা হয়। নিজেদের আড়াল করার জন্য তারা বিভিন্ন এনক্রিপটেড এ্যাপস ব্যবহার করতো।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরম্নদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন মামলা দায়ের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আরএস