মাদরাসাছাত্রকে অপহরণ করে হত্যা: মূলহতো গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪, ০১:৪৩ পিএম

চাঞ্চল্যকর মাদরাসাছাত্র তাওহীদ ইসলামকে অপহরণ করে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে লাশ গুমের পরও মুক্তিপণের টাকা আদায়ের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী মো. মকবুল হোসেনকে (৩৭) রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা হতে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০।

সোমবার কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর এলাকার রসুলপুর জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্র মো. তাওহীদ ইসলাম (১০) নিখোঁজ হয়। ওইদিন রাত আনুমানিক ৯টা ২০ মিনিটে অজ্ঞাত একজন ব্যক্তি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফোন করে জানান তাওহীদকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন মোবাইল ফোনের সেই ব্যক্তি।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেপ্তারকৃত মকবুল পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাওহীদের পরিবার ও গ্রেপ্তারকৃত মকবুল একই এলাকায় বসবাস করতো কিছুদিন পূর্বে গ্রেপ্তারকৃত মকবুল ভিকটিমের বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেছে বলে জানায়। একই এলাকায় বসবাস এবং বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করার সুবাদে ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। ভিকটিম তাওহীদের বাবা একজন প্রবাসী। তাওহীদ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর এলাকার একটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগে পড়াশুনা করতো। যার ফলে সে সকালে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে বাসা হতে বের হতো এবং বাসায় ফিরতে প্রায়ই সন্ধ্যা হয়ে যেতো। মকবুলের ধারণা ছিল যে, ভিকটিমের বাবা প্রবাসী তাই ভিকটিমকে অপহরণ করলে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করা যাবে।

এরই প্রেক্ষিতে মকবুল অল্পসময়ে অধিক অর্থ লাভের আশায় প্রায় ৬ মাস যাবৎ ভিকটিমকে অপহরণের পরিকল্পনা করে আসছিল।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১০ ফেব্রুয়ারি মকবুল ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে নিকটস্থ একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তার হাত, পা ও মুখ বেধে রাখে। পরবর্তীতে মকবুল পূর্বে ক্রয়কৃত তার মোবাইল কৌশলে ভিকটিমের বাসায় রেখে আসে। বাসায় রেখে আসা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণের বিষয়টি জানায় এবং ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

পরবর্তীতে ভিকটিমের মুখের বাঁধন খুলে গেলে ভিকটিম ডাক-চিৎকার করলে মকবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিম তাওহীদের মুখ ও গলা মাফলার দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং ভিকটিমের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ওই এলাকার নিকটস্থ একটি সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে রাখে।

আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

মাসুম/ইএইচ