রাজধানীতে জাল টাকা ও তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেফতার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪, ০২:০২ পিএম

রাজধানীর কদমতলী এলাকা হতে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ ১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১০।

আজ ( ১৬ফেব্রুয়ারি ) র‍্যাব-১০ এর  কমান্ডার মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল এক সংবাদ সম্মেলনে এটি নিশ্চিত করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে যে, একটি প্রতারক চক্র দীর্ঘ যাবত জাল নোট তৈরি করে রাজধানী ঢাকার কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছে। এই চক্রটি জাল নোটের অবৈধ ব্যবসা করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রি: তারিখ আনুমানিক রাত ১০:৪৫ ঘটিকায় র‍্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ১ জন জাল টাকা প্রস্তকারীকে গ্রেফতার করে। 

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোঃ জিসান হোসেন রিফাত (১৯), পিতা- মোঃ দিদারুল আলম, সাং- কুতুবখালী, থানা-যাত্রাবাড়ী, ঢাকা বলে জানা যায়। এ সময় তার নিকট হতে ০২,৩০,৯০০/- (দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার নয়শত) টাকার মূল্যমানের জাল নোট (যার মধ্যে ১০০০, ৫০০, ১০০, ৫০, ২০ ও ১০ টাকা সমমানের আল নোট), ১টি মনিটর, ১টি সিপিইউ, ১টি কালার প্রিন্টার, ৩৪টি হার্ডডিক্স, ০১টি মাউজ, ০১টি কী-বোর্ড, ৬৯টি ক্যাবল, ০২টি স্কিন প্রিন্টিং ফ্রেম, ০১টি মাল টাকা কাটার কাঠের বোর্ড, ৫৮টি এন্টি কাটার ব্লেড, ০১টি কাচি, ৩২টি ফেবিকল আঠা ও জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত ২৬৪ পিস সাদা কাগজ সহ জালনোট তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত জিসান সংঘবদ্ধ চক্র কর্তৃক ব্যবহৃত টেলিগ্রাম অ্যাপস, ইউটিউব ও গুগলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে জাল টাকা তৈরির সার্বিক দক্ষতা অর্জন করে। অতঃপর জিসান উচ্চাভিলাষী অভিপ্রায় ও কম সময়ে অল্প পুঁজিতে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে জাল টাকা প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে সে জাল টাকা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ক্রয় করে এবং জাল টাকা সরবরাহের জন্য জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহকারী বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেইজ ও গ্রুপে সংযুক্ত হয়।

একটি সংঘবদ্ধ চক্র টেলিগ্রাম অ্যাপস ব্যবহার করে জাল টাকা তৈরির প্রযুক্তি আদান প্রদান করে এবং, জাল টাকা বিক্রির জন্য নেটওয়ার্ক হিসেবে ব্যবহার করে। জিসান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খুলে এবং সেখানে সে জাল নোট তৈরি/সরবরাহ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করে অভিনব কায়দায় জাল নোটগুলো বিক্রয় করত। সে তার ফেইসবুক গ্রুপ হতে কমেন্ট দেখে তাদের সাথে মেসেঞ্জারে চ্যাটিং এর মাধ্যমে ক্লায়েন্ট তৈরি করে অগ্রিম টাকা নিয়ে নিভ এবং পরবর্তীতে তাদের সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করতো।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, উক্ত চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরিকৃত জাল নোট সরবরাহ করত। সে প্রতি ০১ লক্ষ টাকা মূল্যের জাল নোট ১০-১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। জাল টাকা সরবরাহকারী চক্রটি মাছ খামার, লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানা কৌশল অবলম্বন করে মাল নোট সরবরাহ করে আসছিল।

এছাড়াও জিসান অনিক জব-সমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানির পশুর হাট উপলক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ছাপিয়ে ছিল বলে তথা প্রদান করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জালনোট প্রিন্টিং এর সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয়ে ফেলত। এ পর্যন্ত জিসান বিভিন্ন সময়ে প্রায় ০২ কোটি মূল্যমানের জাল নোটের অবৈধ ব্যবসা করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

বিআরইউ