কামরাঙ্গীরচরে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল পরিকল্পনাকে অপ্রয়োজনীয় `ড্রাগন` প্রকল্প বলে অভিহিত করেছেন একুশে এবং স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত কবি নির্মলেন্দু গুণ। ১৫ বছর ধরে কামরাঙ্গীরচরের ৫৫ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা নির্মলেন্দু গুণ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে `ড্যাপ-কামরাঙ্গীরচর, অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন এবং জনগণের ভাবনা` শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন।
কামরাঙ্গীচরচর নাগরিক পরিষদ সভাপতি আরো বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কে তাদের পরিকল্পনা বিষয়ে কামরাঙ্গীরচরের ২০ লক্ষ মানুষকে অবহিত করতে হবে। তাদেরকে বাদ দিয়ে নয়। এরকম কোন প্রকল্পের এখতিয়ার সিটি কর্পোরেশনের আদৌ আছে কিনা সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
গোল টেবিল বৈঠকে নগর বিশেষজ্ঞরা জানান, কামরাঙ্গীরচর ড্যাপ অধিভুক্ত। এখানে কোন প্রকল্প পরিকল্পনা প্রণয়ন রাজউকের কাজ। ড্যাপে কামরাঙ্গীরচর আবাসিক প্রধান মিশ্র এলাকা। এখানে ডিএসসিসির বাণিজ্যিক হাব বিষয়টি আইন সংগত নয়। ড্যাপের বাইরে গিয়ে বাণিজ্যিক হাব করা হবে বেআইনি। যা ড্যাপের লক্ষ্যকে বাঁধাগ্রস্ত করবে।
তারা আরো বলেন, বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করে কোনো প্রকল্প ভাবনা বাস্তব সম্মত নয়। বরং এখানে দখল হওয়া খাল ও নদীর চ্যানেল উদ্ধার করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে কামরাঙ্গীরচরের তিন ওয়ার্ডের ভূমি মালিকরা জানান, উন্নয়নের সঙ্গে তাদের বিরোধ নেই। তবে তাদেরকে সব জানিয়ে সঙ্গে নিয়ে যে কোন কাজ করতে হবে। তারা কামরাঙ্গীরচরে রাজউকের ভবন নির্মাণ অনুমোদন আবারো চালুর দাবি জানান।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব এস এম মাওলা রেজা, অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কামরাঙ্গীরচর নাগরিক পরিষদের সমন্বয়ক হাসান আহমেদ, অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, আদিল মোহাম্মদ খান, বাপা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, কামরাঙ্গীরচর ভূমি মালিক প্রতিনিধি হাজী মো. ফারুক হোসেন। আইনজীবী আরিফুর
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন কামরাঙ্গীরচর অঞ্চলে ১০৪ ফিট প্রশস্ত রাস্তা ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল (সিবিডি) গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে ডিএসসিসি। এখানকার সিংহভাগ জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন। পরিকল্পনার আওতাভুক্ত ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ২২ হাজার ভবন রয়েছে। বসবাস করছে প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষ।
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে সিটি কর্পোরেশনকে একদিকে এখানকার ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে অন্যদিকে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও হতাশা বিরাজ করছে। তারা কোনোভাবেই বসতবাড়ি ছাড়তে চান না।
জীবন দিব কিন্তু তবুও জন্মভূমি দিব না’ এই স্লোগানে ‘জন্মভূমি রক্ষা কমিটি’ গঠন করে একাধিক মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
এইচআর