রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৭টা ১০ মিনিট এবং ৭টা ২০ মিনিটে উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন থেকে দুটি ট্রেন মতিঝিলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর পর পূর্বের শিডিউল মেনে পরবর্তী ট্রেনগুলো চলাচল শুরু করে। তবে বন্ধ রয়েছে মিরপুর ১০ এবং কাজিপাড়া স্টেশন।
এর আগে গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইফতেখার হোসেন বলেন, আমরা সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। সবকিছু যদি ঠিক হলে আগামীকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু করবে।
তিনি বলেন, আশা করা যায় আগামীকাল থেকেই পূর্বের শিডিউইল মেনে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে।
এদিকে রোববার (১১ আগস্ট) শিগ্রিই মেট্রো চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম, এ, এন, ছিদ্দিক। তিনি বলেছিলেন, আমরা মেট্রো চলাচলের জন্য পূর্ণদমে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছি।
কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছিলেন, যাত্রীবহন শুরু করার আগে কয়েকদিন ট্রেন চলাচল করতে হবে। আপনারা দেখতে পারবেন ট্রেনটা চলাচল করছে। এটাকে আমরা বলি ব্লাঙ্ক অপারেশন। এই ব্লাঙ্ক অপারেশন শেষে সরকারের পক্ষ থেকে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়া হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, এই মুহূর্তে এই দুইটি স্টেশন চালু করা সম্ভব না। এই স্টেশন দুটি বাদ রেখে মেট্রো চলাচল করবে।
গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারের পরদিনই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এর পক্ষ থেকে জানানো দেয়া হয় ১৭ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চলাচল করবে। তবে এমন ঘোষণা দেয়া হলেও হঠাৎই ১৫ আগস্ট নতুন ঘোষণা দিয়ে জানানো হয় ১৭ আগস্ট শনিবার থেকে ঢাকায় মেট্রোরেল চালু হচ্ছে না।
ওইদিন ডিএমটিসিএলের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার ১১ আগস্ট ডিএমটিসিএলের আওতায় পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণাধীন এমআরটি লাইন-৬–এর মেট্রোরেল চলাচলে প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সাত দিনের মধ্যে পুনরায় চালু করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। তবে অনিবার্য কারণবশত মেট্রোরেল পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো শুরু করা সম্ভব হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাত্রীবিহীন পরিচালন পরীক্ষণ শেষে মিরপুর-১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশন ছাড়া বাকি ১৪টি স্টেশন সমন্বয়ে মেট্রোরেল পুনরায় চালুর নিমিত্তে মেট্রোরেল সিস্টেম ও মেট্রোরেলে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাই পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মেট্রোরেল পুনরায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য ডিএমটিসিএল আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।
এর আগে সরকারি চাকুরিতে স্থায়িভাবে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। দফায় দফায় অবস্থান কর্মসূচি শেষে রবিবার (৬ জুলাই) থেকে শুরু হয়‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি। রবি ও সোমবার টানা কর্মসূচি পালনের পর মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে বুধবারের কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা। বুধবারের কর্মসূচি শেষ করে বৃহস্পতিবার কর্মসূচি ঘোষণা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতৃবৃন্দরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এক দফা দাবিতে সারা দেশে পালিত হয় ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি।
এরপর আন্দোলনকারীদের ডাকা `কমপ্লিট শাটডাউন` ঘিরে সৃষ্টি হয় সহিংসতা। রণক্ষেত্রে রূপ নেয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান। রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় চালানো হয় হামলা। আগুন দেয়া হয় সরকারি গাড়ি, পুলিশ বক্সসহ সরকারি ভবনে। ভাঙচুর করা হয় নগরবাসীর যাতায়াতের দ্রতগামী যান মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনও।
বিআরইউ