ভারতে মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ০৮:৪২ পিএম

রাজধানীর খিলগাঁও চৌরাস্তায় আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ ভারতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নামে জঘন্য কটূক্তিকারী মহারাষ্ট্রের হিন্দু পুরোহিত রামগিরি মহারাজ এবং তাকে সমর্থনকারী বিজেপির বিধায়ক নিতেশ নারায়ণ রানেকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

শুক্রবার বাদ জুমা এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে সংগঠনের সহ-সভাপতি মাওলানা জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা মুহিউদ্দিন রাব্বানী।

বিশাল বিক্ষোভ মিছিল পূর্বক সমাবেশে মহাসচিব বলেন, ভারতের মহারাষ্ট্রের হিন্দু পুরোহিত রামগিরি মহারাজ এবং তাকে সমর্থন করে বিজেপির বিধায়ক নিতেশ নারায়ণ রানে আস্কারা দেওয়ার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে ভারত সরকারকে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। নতুবা তাদের সাথে বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর কূটনীতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। তাদের বক্তব্যের সাথে ইন্ডিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের যোগসূত্র আছে বলে মহাসচিব দাবি করেন।

মহাসচিব আরও বলেন, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে কোনো বিজ্ঞ আলেমের উপস্থিতি না দেখে আমরা যারপরনাই বিস্মিত হয়েছি। কারণ, স্বৈর-ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতি ও বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে ওলামায়ে কেরাম ব্যাপকভাবে সোচ্চার ছিলেন। অথচ আজ এই নতুন বাংলাদেশে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি থেকে আলেমসমাজকে বঞ্চিত করে আবারও বিতর্কের পথ বেছে নেয়া হলো। আলেমবিহীন এই বৈষম্যমূলক কমিটি আমরা জোরালভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। অবিলম্বে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটিতে আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জহুরুল ইসলাম বলেন, ভারত প্রতিনিয়ত ইসলামি সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ইস্যুগুলো নিয়ে উপমহাদেশে সহিংস পরিবেশের সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি সময়ে রাসূল (সা.) এর নামে যে কটূক্তির ঘটনা ঘটেছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় তিনি আল্লাহ, আল্লাহর রাসুল (সা.) এবং ইসলাম নিয়ে যারা কটূক্তি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতিসংঘের প্রতি জোর দাবি জানান।

সমাবেশ শেষে খতমে নবুওয়ত নেতৃবৃন্দ খিলগাঁও চৌরাস্তা থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি খিলগাঁও মডেল কলেজ হয়ে তালতলা মার্কেটের সামনে দিয়ে খিলগাঁও থানা থেকে ঘুরে আবারো খিলগাঁও চৌরাস্তায় মিছিল পৌঁছালে মহাসচিব আল্লামা মুহিউদ্দিন রাব্বানীর দু‍‍`আর মাধ্যমে আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল শেষ হয়।

এছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ পঞ্চগড়, দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী জেলা শাখা কমিটি এবং আশুলিয়া থানা কমিটিসহ বিভিন্ন স্থানে আজ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আশিকুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মাওলানা ইউনুস ঢালি, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আল আমিন ফয়জী, সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা মোমিনুল ইসলাম, সহকারী দাওয়াহ সম্পাদক সুলতান আহমাদ জাফরি, মাওলানা যুবায়ের মাহমুদ, খিলগাঁও ঈদগাহ মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কাশেম আশরাফী, মাওলানা ফয়সাল মাহমুদ হাবিবি, মাওলানা রওশন জামিল, মাওলানা আব্দুল্লাহ, মুফতী মাহদি হাসান কাসেমী, মুফতী সাইফুল ইসলাম, মাওলানা শহিদুল ইসলাম, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা তৈয়ব, মুফতী মুছা আমান, মুফতী জসিম উদ্দীন, মাওলানা সাইদুল ইসলাম, মাওলানা মেরাজুল ইসলাম, মাওলানা মুহাম্মাদ আলী, মুফতী কামরুল হাসান, মুফতী গুফরান, মুফতী ইসহাক, মাওলানা আলমগির হুসাইন, মাওলানা মাহদি হাসান প্রমুখ।

রহিম/ইএইচ