ফরিদপুরের মধুখালীতে মেয়ে উদ্ধারের তদবিরে এক বাবার খোয়া গেলো ছয় ভরি সোনা-রুপা। উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের মধ্য আড়পাড়া গ্রামের মোস্তফা কামাল উজির মৃধা’র বাড়ীতে ঘটনাটি ঘটেছে।
রোবাবর (১২) জুন দুপুরে এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। শনিবার(১১জুন) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা গেছে, মধ্য আড়পাড়া গ্রামের মোস্তফা কামাল উজির মৃধা’র মেয়ে অর্জিনা বেগমের (২৫) কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়। প্রথম স্বামী রেখে সম্প্রতি আরেকজনকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। কিন্তু মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেননি ওই মেয়ের বাবা-মা।
তারা বিভিন্নভাবে মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা ও তদবির করেন। এক পর্যায়ে শুক্রবার সকালে মোস্তফা কামাল উজির মৃধা’র সঙ্গে স্থানীয় কামারখালী বাজারের একটি খাবার হোটেলে পরিচয় হয় এক অচেনা সাপুড়িয়ার। এসময় তদবির করে মেয়ে উদ্ধারের আশ্বস্ত করেন ওই সাপুড়িয়া। তাৎক্ষনিক সাপুড়িয়াকে বাড়িতে নিয়ে শুরু করেন মেয়ে উদ্ধারের তদবির।
এ ব্যাপারে উজির মৃধা বলেন, ওই সাপুড়িয়ার আমার সাথে কামারখালী বাজারে একটি হোটেলে পরিচয় হয়। সাপুড়িয়ার কথা অনুযায়ী একটি পাতিলে তিন ভরি সোনার গহনা ও তিন ভরি রুপার গহনা রাখতে বলেন। সোনা-রুপার গহনা রাখার পাতিলে একটি সাপ ও অন্যান্য গাছগাছড়া রেখে কৌশলে সোনা-রুপার গহনা হাতিয়ে নেন ওই সাপুড়িয়া। সাপুড়িয়া যাওয়ার সময় বলে যান- কাউকে কিছু না বলতে এবং তিনি রাতে এসে পাতিল খুলবেন। মেয়েও উদ্ধার হয়ে যাবে।
শনিবার বিকাল পর্যন্ত ওই সাপুড়িয়ার আর কোন খোঁজ না পেয়ে, মোবাইল নাম্বারটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সন্দেহ হলে বাড়ীর লোক আশেপাশে লোকের ডেকে এনে পাতিল খুলে দেখি সাপ সহ অন্যান্য জিনিসপত্র আছে কিন্তু ৩ ভরি সোনা ও ৩ ভরি রুপা নেই। পরে সাপটি বাড়ীর লোকজন মেরে ফেলেন। রোববার থানায় জিডি করেছি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় তিন নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) শেখ আবু বাহার এবি বলেন, ঘটনা সঠিক। প্রথমে আমাদের কাউকে তিনি না জানিয়ে এ কাজ করেছেন। পরে ভুক্তভোগী পরিবার আমার কাছে এসেছিলেন আমি থানায় গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, উজির মৃধার মেয়ের প্রথম পক্ষের একটি মেয়ে ও একটি ছেলে আছে। পরবর্তীতে কয়েকমাস আগে প্রথম স্বামী রেখে আরেকজনকে বিয়ে করে। এই মেয়ে ফিরিয়ে আনার তদবির করতে গিয়ে বেচারা সোনাদানা খুইয়েছেন।
এ বিষয়ে আড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার একদিন পরে রোববার সকালে বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। অচেনা এক সাপুড়িয়ার প্রতারণার শিকার হয়ে উজির মৃধা তিন ভরি সোনা আর তিন ভরি রুপার গহনা খুইয়েছেন। অচেনা সাপুড়িয়াকে বিশ্বাস করাটা ভুল ছিলো।
এ প্রসঙ্গে মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে রবিবার ভুক্তভোগী উজির মৃধা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমারসংবাদ/এআই