মির্জাপুরে ইউপি উদ্যোক্তা ছয় বছরে কোটিপতি

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২২, ১২:৪২ পিএম

ছয় বছরের চাকরি জীবনে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তার কোটি টাকার জমি ও বাড়ি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া জন্মসনদ সংশোধনসহ নানা অনিয়মের কারণে এক ভুক্তভোগী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০নং গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবাদানকারী (উদ্যোক্তা) কোদালিয়া গ্রামের মোজাফর হোসেনের ছেলে লোকমান হোসেন ২০১৬ সালে এই পরিষদে চাকরিতে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি কোটিপতি হন। ৩০ লাখ টাকা খরচ করে বিল্ডিং বাড়ি নির্মাণ করেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ধেরুয়া রেলক্রসিং এলাকার ৫০০ গজ উত্তরে ২৮ শতাংশ জায়গা ৭৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা দিয়ে লোকমান নিজের নামে জায়গা কিনেন। 

এছাড়াও একই দিনে তার উকিল শ্যালক লিটনের নামে ৮১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা দিয়ে ৩১ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেছেন। একজন ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা ৬ বছর চাকরি করার পর এত টাকা কিভাবে আয় করে এত সম্পদের মালিক হয় তা নিয়ে এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন।

যেখানে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে বলা হয়েছে। জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ১০০ টাকা ও জন্ম তারিখ ব্যতীত পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফি ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধনের পর সনদের কপি বিনা ফিতে সরবরাহের কথাও বলা হয়েছে।

ওই ইউনিয়নের ভুক্তভোগী রাকিব হোসেন নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, আমার দুই ভাইয়ের জন্মসাল ভুল ছিলো। পরে জন্মসনদ ঠিক করতে গেলে লোকমান ১০ হাজার টাকা চায়। অনেক রিকুয়েস্ট করে ২৫শ টাকা দিয়ে ঠিক করছি কিন্তু অর্থভাবে আমার ভাইয়েরটা ঠিক করতে পারিনি। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে জন্মসনদ সংশোধনে ৩ থেকে শুরু করে ১০ হাজার পর্যন্ত টাকা নিয়ে লোকমান আজ কোটিপতি।

অভিযোগকারী ওই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা গ্রামের শামছুল আলম মল্লিকের ছেলে সুরুজ আল মামুন বলেন, সার্টিফিকেট অনুযায়ী জন্ম সনদ সংশোধন করতে গেলে উদ্যোক্তা লোকমান আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। এজন্য আমি এখন পর্যন্ত জন্মসনদ ঠিক করিনি। পরে বিষয়টি কয়েকজনকে বললে জানতে পারি সে মানুষের কাছ থেকে এভাবেই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমরা এমন উদ্যোক্তা ইউনিয়ন পরিষদে চাইনা এবং তার দ্রুত শাস্তিসহ চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

জানতে চাইলে লোকমান হোসেন বলেন, জন্মসনদ সংশোধনে সরকারি ফি ব্যতীত অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগকারী সুরুজ আমার ফুপাতো ভাই। পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে আমাকে হেনস্তা করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তিনি ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ২৮ শতাংশ জমি কিনেছেন বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেএস