কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল এক্সপ্রেসের বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় আরও দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১২টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে আউয়াল (৩০) ও কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ধোনারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাহেজ উদ্দিনের ছেলে নুরনুবী (২৬)। এর আগে ঘটনার মূলহোতা রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করলে সে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছে।
এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, রাজা মিয়ার তথ্যের ভিত্তিতে কালিয়াকৈর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আউয়ালকে এবং কালিয়াকৈরের সোহাগপল্লীর শিলাবহ পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে নুরনবীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তার কাছ থেকে যাত্রীদের একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এরপর আদালতে পাঠানো হবে। এ মামলায় এ পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নুরনবীর বিরুদ্ধে এর আগেও ডাকাতি ও ছিনতাই মামলা রয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার ভোরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ডাকাত দলের এক সদস্য রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
তার কাছ থেকে বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে লুট করা ৩টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। গতকাল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রাজা মিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের বাস সার্ভিস ঝটিকা পরিবহনের একজন চালক।
প্রসঙ্গত, ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাস গত বুধবার রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে পৌঁছায়।
মহাসড়কের পাশের এই হোটেলে যাত্রীরা খাওয়া-দাওয়া করেন। যাত্রাবিরতি শেষে রাত ১২টার দিকে গন্তব্যের দিকে রওনা দেয় বাসটি। এরপরই সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যেই তিন ধাপে ১৩ জন বাসে ওঠে।
তখনও বাসে থাকা যাত্রীরা আঁচ করতে পারেননি আগামী কয়েকঘণ্টায় কী ঘটতে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর তিন ধাপে বাসে ওঠা ১৩ ডাকাতের তাণ্ডব শুরু হয়। প্রথমে চালকের গলায় চুরি ধরে তারা। এরপর চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার ও যাত্রীদের বেঁধে বাসটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লুট করে।
লুটপাট শেষে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে ডাকতরা। বাসটিতে প্রায় তিন ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় একটি বালুর স্তূপে ফেলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মধুপুর থানায় ওই বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন করেন। এই মামলায় গ্রেপ্তার রাজা মিয়ার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আমারসংবাদ/টিএইচ