চলন্ত বাসে নারীকে ধর্ষণ: যা বললেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার

মাসুদ রানা, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২২, ০৭:০১ পিএম

গাজীপুরের শ্রীপুরে যাত্রীবাহী তাকওয়া পরিবহন থেকে স্বামীকে ফেলে দিয়ে স্ত্রীকে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

রোববার (৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় গাজীপুরের তিনজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচ অভিযুক্ত ও অপর আদালতে ওই নারী ঘটনার স্বীকারেক্তিমূলক জবানববিন্দ দেন।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এস এম শফিউল্লাহ তাঁর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ধর্ষনের ঘটনার পর পুলিশ ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাকিব মোল্লা (২০) এবং সুমন হাসান (২২) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ ইশরাত জেনিফার জেরিন এর আদালত, সুুমন খান (২০) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৪ জোবায়দা নাসরনি বর্ণার আদালত এবং সজীব (২১) ও শাহীন মিয়া (১৯) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ ইখলাস উদ্দিনের আদালতে ঘটনার স্বীকারেক্তিমূলক দেন। ভিকটিম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৫ আলীফা বেগমের আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

নওগাঁ থেকে ওই নারী তার স্বামীকে নিয়ে একতা পরিবহনে শনিবার ভোর তিনটার দিকে গাজীপুরের বোগড়া বাইপাস এলাকায় আসেন। তারা সেখান থেকে মসয়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ী এলাকায় যাওয়ার জন্য যাত্রীবাহী পরিবহন খোঁজ করছিলেন।

এসময় তাকওয়া পরিবহন কোম্পানীর ওই বাসটির চালক, হেলপার ও কন্টাডক্টর (গাজীপুর-জ  ১১-০৩১১) মাস্টারবাড়ী যাওয়ার কথা বলে তাদেরকে গাড়ীতে তুলে। বাসটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তায় গিয়ে ওই নারী ও তার স্বামীকে রেখে সকল যাত্রী নামিয়ে দেয়।

পরে মাস্টারবাড়ী যাওয়ার পথে মাওনা চৌরাস্তা উড়ালসেতু এলাকায় নারীর স্বামীকে জোরপূর্বক পিটিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে বাসটি ঘুরিয়ে জয়দেবপুরের দিকে আসার সময় অভিযুক্তরা নারীর সাথে থাকা মোবাইল, ব্যাগ, নগদ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিছুদূর এগিয়ে ভাওয়ালের শালবন রাজেন্দ্রপুর এলাকায় নারীকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।

এসপি এ এস এম শফিউল্লাহ জানায়, নারীর স্বামীকে নামিয়ে দেওয়ার পর তিনি শ্রীপুর থানা পুলিশকে ঘটনা অবহিত করেন এবং পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে।

এদিকে, নারীকে রাজেন্দ্রপুর এলাকায় নামানোর পর তিনি সড়কে কর্তব্যরত গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের শরণাপন্ন হন। মেট্রোপলিটন জেলা পুলিশকে অবহিত করলে তাৎক্ষণিক নারীর কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনেন। জেলা ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথভাবে সড়কের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিুক্তদের ১২ ঘন্টার ব্যবধানে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় ভিকটিম বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরেুদ্ধে মামলা করেন। ভিকটিম নারীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

 এআই