প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অন্তরালে ৪২ বিত্তবানের নামে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে শিগগিরই তদন্ত শুরু করছে দুদক। এ সংক্রান্ত অনুমোদন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পটুয়াখালী দুদক উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে।
অনুমোদন প্রাপ্তির পর কলাপাড়া থানায় উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলাটি ফাইনাল রিপোর্টে নথিজাত করে এ ঘটনায় দুদকের একজন সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে দুদক কার্যালয়ে মামলা করবেন। এরপর নতুন করে মামলার তদন্ত শুরু করবে দুদক।
এর আগে কলাপাড়া থানা পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি ভুমি অফিস সার্ভেয়ার মো. হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরন করে। পরবর্তীতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় মামলাটি তদন্তের জন্য পটুয়াখালী দুদক উপ-পরিচালকের কার্যালয়কে লিখিতভাবে অবগত করা হয়।
এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দুদক, পটুয়াখালী কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলাপাড়া থানার ওসি মো. জসিম।
এদিকে জেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি এ ঘটনায় এখনও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এছাড়া ২৫ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি ভুয়া বন্দোবস্ত কান্ডে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার স্বাক্ষর সঠিক ছিল কিনা, তা নিশ্চিত হতে এখনও সিআইডি বিশেষজ্ঞের মতামত প্রেরন করা হয়নি।
কিন্তু এর আগে বেশ কিছু প্রিন্ট, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে প্রচার করা হযেছে।
কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও তদন্ত কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি হিসেবে তদন্ত কমিটিতে আছি। তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ, প্রতিবেদন দাখিলের আগে আমরা কমিটির সদস্যরা আর একবার বসবো।’
জেলা রেজিষ্ট্রার ও তদন্ত কমিটির অপর সদস্য মো. কামাল হোসেন বলেন,’বন্দোবস্ত দলিলে উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার স্বাক্ষর সঠিক ছিল কিনা, এটি সিআইডি’র এক্সপার্ট ওপিনিয়ন ছাড়া বলা যাবে না। তদন্ত প্রতিবেদন কবে নাগাদ জমা দেয়া হবে এটি তদন্ত কমিটির প্রধান বলতে পারেবেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ওবায়দুর রহমানের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য জানতে তার সরকারি নম্বরে ফোন দেয়ার পরও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
দুদুক, পটুয়াখালী সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডের মামলার কাগজপত্র আমরা থানা পুলিশের কাছ থেকে পেয়েছি। এ সংক্রান্ত অনুমোদন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে।
অনুমোদন প্রাপ্তির পর কলাপাড়া থানায় দায়েরকৃত মামলাটি ফাইনাল রিপোর্টে নথিজাত করে দুদকের একজন সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে মামলা করবেন। এরপর নতুন করে মামলার তদন্ত করবে দুদক।’
দুদক উপ-পরিচালক আরও বলেন,’ভুয়া বন্দোবস্ত বাতিল করলেই তো সব শেষ হয়ে যায় না, অপরাধ তো সংঘটিত হয়েছে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার কার্যালয়কে ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত অরিজিন পেপারস্ প্রস্তুত রাখার জন্য বলেছি।
প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা তদন্ত শুরু করবো। উপজেলা নিবার্হী কর্মকতা’র স্বাক্ষর যাচাইয়ে সিআইডি বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হবে। এছাড়া সাব-রেজিষ্ট্রার কিসের ভিত্তিতে দুই শতাংশের বেশী পরিমান জমি রেজিস্ট্রি করলেন সেটিও আমরা খতিয়ে দেখবো।’
আমারসংবাদ/টিএইচ