নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বিলে মাছ ধরা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সাত জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কুলপতাক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আদর্শনগর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে আহতদের উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সাত জনকে ভর্তি করা হয়। আর বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহতরা হলেন, উপজেলার মহরা গ্রামের আ. রাজ্জাক (৭০), তার ছেলে মতিউর (৪০), রেজাউল (৩৫), ভাগ্নী পারভিন আক্তার ( ৪০), ঊষা আক্তার (৫০), নাতী রুমা আক্তার (৩৫)। এছাড়া এই পক্ষের আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে ঊষা আক্তারের মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে। তার মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই লেগেছে।
অপর পক্ষের পাইলাটি গ্রামের আহত দুর্লভকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া হাবিুবল মিয়া ও জাহাঙ্গীরসহ আরও কয়েখজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মহরা গ্রামের পাশে নত্তি বিল ইজারা নেয় কয়রাপাড়া মৎস্যজীবি সমিতি। এই সমিতির মালিক পাইলাটি গ্রামের হাবিবুল, চানমিয়া ও মুখলেছসহ আরও বেশ কয়েকজন। পাশের মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে মাছ ধরা নিয়ে সংঘর্ষ হলে নারী সহ অন্তত ১২জন আহত হন। এ সময় দুই পক্ষই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় অংশ নেয়।
এ ঘটনায় মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে অপর পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে পাইলাটি গ্রামের মাসুম মিয়া, হাবুল্লা ও চান মিয়াসহ আট জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনায় পাইলাটি গ্রামের হাবিবুল মিয়া বাদী হয়ে মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলামসহ ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, নত্তি বিলে নয় আমরা মাছ ধরতে গিয়েছিলাম আমাদের জমিতে। ওই পক্ষ নত্তি বিল ইজারা নিয়ে পাশের সব ছোট বিল নিজেরদের বিল বলে দাবি করছে। পাশে কস্তর বিলে আমাদের জমিতে মাছ ধরতে গেলে তারা এটিও ইজারার বিল দাবি করে কয়েকশ লোক মিলে রামদা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের পরিবারের ১০ জনকে আহত করে। এরমধ্যে নারীসহ ৬ জন হাসপাতলে ভর্তি আছেন।
এদিকে নত্তি বিলের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পাইলাটি গ্রামের হাবিবুল মিয়া বলেন, বুধবার রাত তিনটার দিকে রেজাউল তার লোকজন নিয়ে এসে বিলে মাছ ধরা শুরু করে। আমি বাধা দিলে আমাকে মারধর করে নৌকা থেকে ফেলে দেয়। এ সময় আমার সাথে থাকা জাহাঙ্গীর ও দুর্লভকেও মারধর করে। পরে ঘটনাটি বাড়িতে গিয়ে বললে সকালে লোকজন এসে তাদের বাধা দেয়। পরে রেজাউলদের লোকজন আমাদের ফের মারধর করে। আহত দুর্লভ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছে। ওই পক্ষকে বিলের ইজারার কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছি। তদন্ত করে সবকিছু দেখে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএস