গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে লীজ নেওয়া পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৪০০ মণ মাছ নিধন করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন লীজকৃত পুকুরের মালিক শ্রী সুকমল সরকার ভক্ত।
শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে মামলার বিষয়টি আমার সংবাদকে নিশ্চিত করেন গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দিন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভক্তের লীজ নেওয়া ওই কোচ পুকুরটিতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের ঘটনা ঘটে। তিন একর ৫১ শতক ওই পুকুরটিতে শফিকুল ও মজিদ নামের দুই ব্যক্তি রাতের বেলা পাহাড়াদারের দায়িত্বে ছিলেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শাখাহার ইউনিয়নের আলীগ্রামের মৃত কর্নধার সরকারের ছেলে শ্রী সুকমল একজন প্রকৃত মাছ ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন থেকে উপজেলার কোচপুকুরটি লীজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসতেছিলেন। এর মধ্যে দুইজন পাহাড়াদার থাকা সত্বেও গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কে বা কাহারা পুকুরে বিষ প্রয়োগ করলে ওই পুকুরে থাকা প্রায় ৪০০ মণ মাছ মারা যায়। এতে করে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতে শ্রী সুকমল সরকার বাদি হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
লীজ নেওয়া পুকুরে মালিক শ্রী সুকমল সরকার "আমার সংবাদকে" জানান, এই পুকুরটিতে তিনি প্রায় ১০/১২ বছর ধরে মাছ চায় করেন। এর মধ্যে সর্বশেষ এক বছর আগে আবারো ৩ বছরের জন্য লীজ নেন তিনি। লীজ নেওয়ার পর থেকেই পুকুর নেওয়াকে কেন্দ্র করে একটি মহলের সাথে তার মনোমালিন্য চলে আসছে। তারা শত্রুতা করে এঘটনা ঘটাতে পারেন বলে ধারণা তার।
এছাড়া ২০১৩ সালে তার ছোট ভাই মাঠাই চন্দ্র (২৮) কে মুক্তিপণ নেওয়ার উদ্দেশ্য অপহরণ করে হত্যা করা হয়।তিনি সেই হত্যা মামলার বাদী। ওই মামলায় তিনি সন্দেহ ভাজন ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সেখান থেকে ২ জনের নাম বাদ দিয়ে আরো ৫ জনসহ মোট ৮ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) জমা দেন। মামলাটি এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তার ক্ষতির জন্য, শত্রুতা বশত বা তাকে ভয় দেখানোর জন্য তারাও এই মাছ নিধন করে থাকতে পারে বলেও ধারণা করেন শ্রী সুকমল সরকার ভক্ত।
এসময় তিনি বলেন, আমার ১০ জনের সংসার। এই পুকুরটিই আমার সব। আমি খাদ্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকার মাছের খাদ্য বাকিতে নিয়েছি। যা ৬ মাস পর জাল টেনে (মাছ ধরে) দেওয়ার কথা। কিন্তু আমার পুকুরে শফিকুল ও মজিদ নামের দুইজন রাতে বেলা পাহাড়াদার থাকার পরেও বিষ দিয়ে সব মাছ নিধনে আমি একেবারে সর্বশান্ত হয়ে গেলাম। এখন আমার পথে বসা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।
এসময় দ্রুত ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়াসহ সরকারের কাছে আর্থিকভাবে সহযোগিতাও চান তিনি।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দিন বলেন, লীজ নেওয়া পুকুরে মাছ নিধনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
কেএস