নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় রাতের অন্ধকারে সরকারি বিএডিসির ইউরিয়া সার কালো বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করে দেওয়ার সময় ডিলারসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের ফলহারি গ্রামের মৃত খুরশিদ আলমের ছেলে ডিলার দেলোয়ার হোসেন মিলন (৪৫) ও একই গ্রামের পিকআপ চালক গিয়াস উদ্দিন (১৯)।
রোববার (২১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে ২ আসামিকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পরে আদালত ২আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
এর আগে, গেল শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার মাওলানা বাজার এলাকা থেকে পিকআপভর্তি ২ হাজার ২৫০ কেজি (২ মেট্রিক টন) বিডিএস ইউরিয়া সার জব্দ করা হয়।
নরোত্তমপুর ইউনিয়নের করম বক্স বাজারের সারের সাব ডিলার শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ডিলার মিলন বরাদ্দ অনুসারে সার উত্তোলন করে বাহিরে বিক্রি করে দেয়। তার নামে বরাদ্দ দেওয়া সার থেকে ২হাজার ২৫০ কেজি সার অবৈধভাবে বিক্রির জন্য রাতের অন্ধকারে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের করম বক্স বাজারের গুদাম থেকে পাচার করে বেগমগঞ্জ উপজেলার মুন্সিরহাট বাজারে নেওয়ার পথে সার গুলো মাওলানা বাজারে আটক করা হয়। তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। পরে পুলিশ তাকে সারসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, নরোত্তমপুর ইউনিয়নে ৯জন সারের সাব ডিলার থাকার কথা রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৭জন সাব ডিলার রয়েছে। নিয়মিত সার নেয় ৩জন ডিলার। ডিলারের সাব ডিলারের কাছে সার বিক্রির কথা থাকলেও সে বেশি দামে বাহিরে সার বিক্রি করে দেয়। সারের দাম বাড়ার আগে ৩০০ বস্তা সার নিয়ে আসে ডিলার মিলন। এরপর আমি ২০বস্তা সার চাইলে সে বলে সার নেই। পরে কৃষি কর্মকর্তা জরিপ দেখে তার গোডাউনে ১৫০ বস্তা সার রয়েছে। সে বেশি দামে সাধারণ মানুষের কাছে এবং বেগমগঞ্জ উপজেলার মুন্সিরহাট বাজারে সার বিক্রি করে ও মেমো ছাড়া সাব ডিলারদের কাছে সার বিক্রি করে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গেল শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার ১নং নরোত্তমপুর ইউনিয়নের সারের ডিলার মিলন বিএডিসির ইউরিয়া সার কালো বাজারী করে বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে মুন্সিরহাটের অজ্ঞাত সার ব্যবসায়ীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মিনি পিকআপ যোগে নেওয়ার পথে মাওলানা বাজার এলাকায় স্থানীয় লোকজন আটক করে। সংবাদ পেয়ে কবিরহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডিলার মিলন ও চালক গিয়াস উদ্দিন পুলিশ হেফাজতে নেয়। বর্তমানে আটককৃতরা কবিরহাট থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পিকআপভর্তি সার সহ দুইজনকে আটক করে থানায় এনে রাখা হয়। পরে এ ঘটনায় রোববার সকালে উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার বাদী হয়ে কবিরহাট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন। দুপুর ২টার দিকে ওই মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা করে পুলিশ। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
কেএস