সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় দু’জন, দিনাজপুরে তিনজন, শেরপুরে দু’জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ভোর থেকে এসব ঘটনা ঘটেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন নিচে তুলে ধরা হল-
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলাধীন হাফছড়ি ইউনিয়নের তৈকর্মা এলাকায় কাঠ বোঝাই ট্রাক উল্টে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত আরো ৮ জন আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিন্দুকছড়ি এলাকা থেকে কাঠ বোঝাই ট্রাকটি (ঢাকা মেট্রো-ট- ২৪৩০৩৯) মানিকছড়ি উপজেলার গচ্ছাবিল এলাকায় আসার পথে গুইমারার হাফছড়ি ইউনিয়নের তৈকর্মা এলাকায় আসলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। এ সময় গাছের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই দুজনার মৃত্যু হয়। গাড়িতে থাকা অন্যনারাও গুরুতর আহন হন।
স্থানীয়দের সহায়তা ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. রাজু (৩৫), পিতা-আলতাফ হোসেন ও মো. ইলিয়াস (৩৫), পিতা- আব্দুল কাদের দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং গুরুতর আহত মো. আলমগীর (৪২) কে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা করেন।
মানিকছড়ি থানার এসআই শংকর মজুমদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের সুরতাহাল শেষে ঘটনাস্থল গুইমারা হওয়াতে মরদেহ গুইমারা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আহতদের একজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা মানিকছড়ি হাসপাতলে চিকিৎসাধীণ অবস্থা আছেন।
দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ভুট্টাবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দু’জন।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ভোরে ফুলবাড়ী-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ব্রহ্মচারী নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাটকদি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বাসচালক মো. হাকিম (৩৫) ও দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে বাসযাত্রী মো. আশিক আলী (২৩)।
স্থানীয়রা জানায়, ফুলবাড়ীর ব্রহ্মচারী নামক স্থানে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ভুট্টাবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাস ও ট্রাকটি দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই বাসচালক মো. হাকিম ও বাসযাত্রী মো. আশিক আলী মারা যায়।
এদিকে জেলার ঘোড়াঘাটে ট্রাক চাপায় ওমর ফারুক (৪৩) নামে এক কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছে। নিহত কনস্টেবল ওমর ফারুক পাশ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন থেকে ঘোড়াঘাট থানায় চালক কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ভোরে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের নিতাইশামোড় এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
পরে ট্রাক এবং ট্রাকের মালিককে আটক করে পুলিশ এবং ট্রাক চালক পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চালক এবং চালক সহকারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। গাড়িটির মালিক ওই গাড়ীতে চালক সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করত।
গ্রেপ্তার ট্রাক মালিক হলেন, বগুড়া সদর উপজেলার ভান্ডার পাইকার গ্রামের মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে হাফিজার রহমান (৩৮)।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপ-পরিদর্শক লিখন কুমার মন্ডলের নেতৃত্বে নিহত চালক কনস্টেবল ওমর ফারুক সহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা সড়কটিতে রাত্রীকালীন ডিউটি করছিলেন। ভোর সাড়ে ৩ টার সময় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা থেকে ছেড়ে আসা বগুড়াগামী পাথর বোঝাই একটি ট্রাক (চট্ট মেট্রো-ট-১১-৭৩৮৪) নিতাইশা মোড়ে পৌঁছালে কনস্টেবল ওমর ফারুককে চাপা দেয়। এতে ট্রাকের একটি চাকা নিহত পুলিশ সদস্যদের মাথার উপর দিয়ে যাওয়ায় তার পুরো মাথা থেঁথলে যায় এবং তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের নকলা উপজেলার কলাপাড়া গ্রামের কৃষক হানিফ (৪২) ছেলে পিয়াসকে (১১) নিয়ে প্রতিদিনের মতই সাইকেল চালিয়ে স্কুলে দিতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিল বাবা ও ছেলের প্রাণ।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে নকলা সাব রেজিস্টার অফিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাকের বডির নিচে ঝুলে ছিল দুর্ঘটনা কবলিত সাইকেলের সামনের অংশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রতিদিন কলাপাড়া গ্রামের কৃষক হানিফ তার পুত্র পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র পিয়াসকে নিয়ে নকলা পৌর শহরের রইস উদ্দিন একাডেমিতে সাইকেলে করে যাওয়া-আসা করত। মঙ্গলবার স্কুলের পাশেই ঘুমন্ত এক ট্রাক ড্রাইভারের চাপায় পিষ্ট হয়ে বাবা হানিফ মৃত্যুবরণ করেন। অপরদিকে মেধাবী স্কুলছাত্র পিয়াসকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক মৃত তাকে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুশফিকুর রহমান জানান, এরইমধ্যে ঘাতক ট্রাককে (ঢাকা মেট্রো-ট ২৪-৭১৩০) আটক করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক রয়েছেন এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কেএস