বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলতি অর্থ বছরে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় তীব্র ওষুধ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। রোগীরা পাচ্ছেন না কাঙ্খিত সেবা। গত তিন মাস ধরে সরকারিভাবে ওষুধ সরবরাহ না পাওয়ায় কর্মরত চিকিৎসকদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বিশেষ করে ভর্তি হওয়া রোগীদের ভোগান্তি বেড়েছে সীমাহীন। প্রান্তিক ও হতদরিদ্র রোগীরা পড়েছেন মহা বিপাকে। চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
হাসপাতাল ঘুরে ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাক্তার সুকান্ত কুমার পাল জানান, এ উপজেলায় প্রায় দুই লক্ষ মানুষের বিপরীতে বছরে ইনডোর ও আউট ডোরে প্রায় ৭৫ হাজার থেকে ৭৬ হাজার মানুষ চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।
এরমধ্যে আউটডোরে প্রায় ৬০ হাজার রোগী প্রাথমিক চিকিৎসাসহ ও তাদের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। ইনডোরে প্রায় ১৫/১৬ হাজার রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জনবল সংকট থাকলেও ওষুধ সরবরাহ কম থাকায় চিকিৎসা কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বাজেটের ৭০ ভাগ অর্থ বরাদ্দ হয়। তার মধ্য থেকে ৭৫ ভাগ ওষুধ সরবরাহ করে ইডিসিএল। চাহিদা অনুযায়ী বাকি ২৫ ভাগ ওষুধ স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা হয়।
গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে বাজেটের যে ওষুধ বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা জুন ২০২২ পর্যন্ত চলমান ছিল। নতুন বাজেট বরাদ্দ না আসায় বর্তমানে গত জুলাই থেকে আগস্টের এই মাস ধরে ওষুধ সংকট দেখা দেয়। শীগ্রই ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে জানান ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
হাসপাতালে আসা আউট ডোরের রোগী ফয়লাহাটের আসমা, তালবুনিয়া গ্রামের লাবনী ও বাইনতলার বাসিন্দা ইউনুস আলী জানান হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখিয়েছেন। শুধু প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড ও আয়রন ট্যাবলেট দিয়েছেন। অন্য ঔষধ বাহির থেকে কিনে নিতে প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন।
ইনডোরে ভর্তি থাকা রোগী মাহামুদ জানান, প্রায় সব ওষুধ বাহির থেকে কিনে নিতে হচ্ছে। একই কথা বলেন বৃদ্ধ আহম্মদ আলী। আগত রোগীরা খোদোক্তি প্রকাশ করে বলেন আমাদের খুলনা সিটি করপোরেশন এর মেয়র মহোদয় ও উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার মহোদয় একটু সুদৃষ্টি দিলে ঔষধ সংকটের সমাধান সম্ভব। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এম, এ সবুর রানা`র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সরকারী হাসপাতালে যাওয়া রোগীরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। দ্রুত ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা সহজিকরণ করতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও জেলা সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে দ্রুত ঔষধ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
এআই