চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন দুর্গম পাহাড়ি এলাকার জঙ্গল চাম্বলে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। ওই কারখানায় তৈরিকৃত অস্ত্র স্থানীয় জলদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী এবং ডাকাতদের কাছে বিক্রি করতো জাকেরুল্লাহ। এক একটা অস্ত্র তৈরির জন্য ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতো এবং ছোট একটা অস্ত্র তৈরি করতে পাঁচ থেকে ছয় দিন সময় নিতো।
গতকাল দুপুর আড়াইটায় অভিযান চালিয়ে দুর্গম পাহাড়ে ওই অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পায় র্যাব। বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ।
তিনি জানান, ওই কারখানা থেকে ৮টি ওয়ান শুটারগান, ২টি পিস্তল ও অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ সময় অস্ত্র তৈরির মূলহোতা জাকেরুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জাকেরুল্লাহ জঙ্গল চাম্বল এলাকার মৌলভী নুরুল হুদার ছেলে।
তিনি আরও বলেন, জঙ্গল চাম্বল এলাকায় অস্ত্রের কারখানায় তৈরি অস্ত্র স্থানীয় জলদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী এবং ডাকাতদের কাছে বিক্রি করে আসছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় র্যাবের একটি টিম গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। যেহেতু এলাকাটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং অপরিচিত কাউকে দেখলেই এই অস্ত্র তৈরির সাথে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যরা সতর্ক হয়ে যেত, ফলে তাদের অবস্থান শনাক্তকরণ ছিল একটি কঠিন বিষয়। কিন্তু আমরা কৌশলে পাহাড়ি এলাকার ভেতর দিয়ে ওই এলাকায় প্রবেশ করায় তারা টের পায়নি। এরপর কারখানার অবস্থা নিশ্চিত হয়ে দুপুর আড়াইটায় সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। ওখানে একটি টিনের ঘরের ভেতরে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পাই। সেখান থেকে ১০টি অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ জাকেরুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।
লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ বলেন, জাকেরুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে গোপনে অস্ত্র তৈরি করে হচ্ছে। সে অস্ত্র তৈরির জন্য ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিতো এবং পাঁচ থেকে ছয়দিন সময় নিতো। জাকেরুল্লাহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে মাঝে মধ্যে কৃষি কাজ করতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান।
তিনি আরও জানান, তারা দুইজন কারিগর মিলে অস্ত্র তৈরির কাজ করতো। অস্ত্র তৈরির জন্য তারা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ গ্রাইন্ডার মেশিন, ঝালাই মেশিন, ড্রিল মেশিন, হাতুড়ি, রড কাটার, বাটালসহ প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রাদি ওই কারখানায় ছিল। যন্ত্রগুলো পরিচালনার জন্য দূরের আরেকটি বাড়ি থেকে এই বাড়িতে তারা বৈদ্যুতিক সংযোগ টানে।
এসএম