নির্যাতনের অপমানে এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২, ০৮:৩৭ পিএম

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গ্রামের মাতাব্বরদের কাছে নির্যাতনের শিকার হয়ে বিষপানে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়াতলী গ্রামের সামছুল দেওয়ানের ছেলে ডি.এম. সালমান (১৫)। সে উপজেলার গল্লি জনতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো। মাকে নিয়ে জামুর্কী ইউনিয়নের চুকুরিয়া গ্রামে নানার বাড়ি থেকেই সে লেখাপড়া করছিলো।

নিহতের ফুপাতো ভাই উজ্জ্বল জানায়, গত ৩১ আগস্ট গ্রামের আল-আমিন নামের এক যুবকের কাছে পাওনা দুই হাজার টাকা চাইলে সে সালমানকে টাকা দেয়ার কথা বলে চুকুরিয়া সুইচগেইট এলাকার শফিকের দোকানে নিয়ে যায়। পরে সেই দোকান থেকে কৌশলে অন্যত্র ৮ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে ক্যাশ আউট করে, কিন্তু টাকা ভুলে বাড়িতে রেখে এসেছে বলে দোকানিকে জানালে কিছুসময় কথোপকথনের পর সে ঘন্টাখানেক পর বাড়ি গিয়ে টাকা নিয়ে আসবে বলে জানায়। ওইখান থেকে পাওনা টাকা না দেয়ায় বাড়ি চলে যায় সালমানও। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পর আল-আমিন টাকা না দেয়ায় এবং তাকে খোঁজে না পাওয়ায় সঙ্গে থাকা সালমানকে রাতে ডেকে নিয়ে সেকেন্দার নামক ব্যক্তির বাড়িতে যায় শফিকসহ অন্যান্যরা।

ওই রাতেই তিন-চার ঘন্টা আটকে রেখে একই গ্রামের সেকেন্দার, শফিক, মুক্তার, সাইফুল, লতিফ মিলে সালমানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায়। সেকেন্দার ও শফিক নিকটতম আত্মীয় বলে জানা গেছে। পরে রাত ১২টার দিকে সালমান একই এলাকার মামুন তালুকদার নামের এক বড় ভাইকে ফোন করে তাকে সেখান থেকে নিয়ে যেতে বলে। পরে মামুন এসে তাকে সেকেন্দারের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে ভয়ে বাড়ি না গিয়ে মামুনের বাসায় রাত কাটায়।

মামুন তালুকদার জানায়, রাতে আমি সালমানকে আমার সাথে রাখি। পরদিন সকাল ৬টার দিকে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ঘন্টাখানেক পর মামুনের সাথে দেখা হলে সালমান তাকে বলে আমার খুব খারাপ লাগতেছে, আমি বিষ খেয়েছি। বিষয়টি নিহতের ভুপাতো ভাইকে মুঠোফোনে জানিয়ে সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে সালমানের মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। লাশ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের (পি.এম.) জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পি.এম. রিপোর্ট প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেএস