চরফ্যাসন উপজেলার মৎস্যপল্লীর শিশুদের কানে পৌঁছায় না স্কুলের ঘণ্টা। যে বয়সে হাতে থাকবে বই, কাঁধে স্কুল ব্যাগ, সে বয়সে ওরা নদীর উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধরছে মাছ। হাসি-আনন্দে বেড়ে ওঠার কথা থাকলেও, মাথায় বহন করে মাছের ঝুঁড়ি। করোনায় শিখিয়ে গেছেন বইয়ের পরিবর্তে কাজ।
মৎস্যপল্লীর অধিকাংশ শিশু হয়ে ওঠে মৎস্যজীবী। মাছ ধরা, বিক্রি করা, ট্রলার বা নৌকা থেকে ঝুঁড়ি ভরে মাছ নামানো সহ সবই পারে তারা। পরিবার ও পেটের প্রয়োজনে এভাবেই শিশু বয়সে শ্রমের জালে আটকে যায় অধিকাংশ শিশুর জীবন। উপজেলার বেতুয়া, সামরাজ, খেজুর গাছিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। এই পরিবারগুলোর অসংখ্য শিশুর দিন কাটে এভাবে।
মা রোকেয়া বেগম জানান, ছোট ছেলে বয়স মাত্র ১৩ বছর। যে প্রায় দুই বছর বেশি সময় ধরে তার বাবা ও ভাইদের সাথে নদীতে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, শিশুদের কাঁধে থাকে সংসারের বোঝা। পরিবারের সদস্যদের পেটে জন্য কাজ করতে হয় ছোট ছোট শিশুদের।
মাঝি হানিফ মিয়ার দুই সন্তান জহিরুল (২১) ও আবির (১৪)। সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে হানিফ মিয়া বলেন, আমার পরিবারে সাত সদস্য। একজনের ইনকামে সংসার না। নদীতে জাল ফেলা, মাছ ধরা, এত কাজ একা করা সম্ভব হয় বলেই বাধ্য হয়ে ছেলেদের নিজের সঙ্গে নিয়ে যাই।
তবুও সুন্দর একটি জীবন চায় মৎস্যপল্লীর শিশুরা। পরিবারও চায়, তাদের সন্তানরা বেড়ে উঠুক আর দশটা শিশুর মতই। বাবা হয়েও সন্তানকে শিশুবান্ধব জীবন দিতে না পারার কষ্ট বুকে পাথর হয়ে থাকে। সেই কষ্ট অশ্রু হয়ে জায়গা পায় বাবাদের চোখে।
এসএম