উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি তিনযুগ আগে নির্মিত বিএস কোয়ার্টারের

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২, ০১:১১ পিএম

কৃষি উন্নয়নের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য তিন যুগ আগে নির্মিত বিএস কোয়ার্টারগুলোর কোনো উন্নয়ন নেই। উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় সেগুলো বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে।

 ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় প্রতি ইউনিয়নে ১টি করে মোট ১২ টি বিএস কোয়ার্টার রয়েছে। এই কোয়ার্টারগুলোর বেশির ভাগই এখন পরিত্যাক্ত। তাই এগুলোতে বসছে না কোনও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা,  যার ফলে কৃষি সেবা গ্রহণ থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকগণ, ঠিক তেমনি পরিত্যক্ত ভবনগুলো মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

এরই মধ্যে বীর বেতাগৈর ইউনিয়ন পরিষদের দখলে রয়েছে বেতাগৈর বিএসকোয়ার্টার, শেরপুরের বিএস কোয়ার্টারের ৫০ শতাংশ চলে গেছে নদীর গর্ভে, খারুয়ার বিএস কোয়ার্টারের ৫০ শতাংশ চলে গেছে ব্যক্তি দখলে। এ যেন দেখার কেউ নেই। যদিও কৃষি নির্ভরশীল দেশ বাংলাদেশ। বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড দৃশ্যমান হলেও এ উপজেলায় বিএস কোয়ার্টারগুলোতে তেমন উন্নয়নের ছোয়াঁ লাগেনি।

সংশ্লিষ্ট বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ১৯৬২ সনের দিকে তৎকালিন সরকার এই ভবনগুলো প্রথমে সিড গোডাউন (বীজাগার) হিসেবে নির্মাণ করে। পরবর্তীতে এই কর্মসূচি বাতিল করা হলে সরকার সিড গোডাউনগুলো ১৯৮০ সালের দিকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মী-ব্লক সুপার ভাইজারদের (বর্তমানে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) বসবাসের জন্য সংস্কার করে কোয়ার্টারে পরিণত করা হয়। মাত্র ৫০ টাকা ভাড়ায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এসব কোয়ার্টারে থাকতেন।

সরজমিন পরির্দশন করে জানা গেছে, এসব ব্যয়বহুল কোয়ার্টার গুলো মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃষি বিভাগের ব্লক সুপার ভাইজারদের (বিএস) আবাসিক এবং অফিস হিসেবে ব্যবহারের কথা থাকলেও বর্তমানে বেশীর ভাগ কোয়ার্টারেই বিএস’রা বসবাস করছেন না। তাই কোয়ার্টার গুলোতে বসবাস না করা, সংরক্ষণের ও সংস্কারের অভাবে এগুলো এখন অনেকটাই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেকটাই ফাকা ও নির্জন হওয়ায় তা বিভিন্ন জীবজন্তুর আশ্রয়স্থল, অপরাধীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোয়ার্টারগুলোতে নজরদারী না রাখায় চুরি হয়ে গেছে এগুলোর দরজা-জানালা। এমনকি এসব ভবন থেকে ইট খুলে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কোনও কোনও কোয়ার্টার এলাকার মাটিও কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জাহাঙ্গীপুর ও রাজগাতী ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আধুনিক প্রযুক্তি ও ভাল বীজ সরবরাহের লক্ষে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের থাকার কথা থাকলেও এসব কোয়ার্টারগুলোতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা না থাকায় তাদের কৃষি বিষয়ে খোজ খবর নিতে উপজেলা সদরে যেতে হয়।

এ ব্যাপারে কয়েকজন বিভিন্ন ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এ গুলোতে বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের একটি স্থায়ী বসার স্থান দরকার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, এসব পরিত্যাক্ত কোয়ার্টার ভেঙ্গে ওই স্থানে ইউনিয়নের কৃষকদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কর্মচারী কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এ ব্যাপারে উন্নয়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

এআই