বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরের চৌমাথা বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক থেকে কালিগঞ্জ টেক্সটাইল গামি সড়কের ২২৩৫ মিটার বঙ্গবন্ধু সড়কটি দির্ঘদিন সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পিচ-খোয়া উঠে গেছে। ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জমছে পানি। এর ওপর দিয়ে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।
পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড থেকে বয়ে যাওয়া এক মাত্র বঙ্গবন্ধু সড়কটি মুক্তিযুদ্ধা শহিদ খান সড়কের সাথে যুক্ত হয়ে ১০ ইউনিয়নের সাথে সংযোগ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। সড়কটি দিয়ে কালিগঞ্জ সাপ্তাহিক হাটে এই অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত ফসল গবাদিপশু হাঁস-মুরগী বাজারজাতকরণে যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাকেরগঞ্জ উপজেলা শহরের সাথে পাদ্রীশিবপুর, রঙ্গশ্রী, ভরপাশা,নিয়ামতি ইউনিয়নের সাথে খুব কম সময়ে স্থলপথে যোগাযোগব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে বঙ্গবন্ধু সড়ক। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য অটোরিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মাহিন্দ্রা সহ নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এটি ১৪ ইউনিয়নের জনসাধারণের যাতায়াতের সড়ক। সড়কটি দ্রুত সময়ে সংস্কার করা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে গেছে।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু সড়কের সাথে সংযোগ হয়েছে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের প্রধান সড়কটি। পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রুহিতারপাড় মহাসড়ক হয়ে ৮নং ওয়ার্ডের উপর দিয়ে কালিগঞ্জ সংযোগ সড়কটি পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পরে এক টুকরো মাটির ছোঁয়া লাগেনি উন্নয়ন দুরের কথা। ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি মাটির তৈরি বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে সমতল ভূমি হয়ে গেছে। পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছাত্রলীগ নেতা সাহিন মোল্লা জানান, যুগের পর যুগ পার হলেও ভাগ্য উন্নয়ন হয়নি পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড বাসির। কাঁচা মাটির তৈরি রাস্তায় বৃষ্টিতে কাদামটিতে চলাচল করতে হয় এলাকাবাসির। বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তিতে পরেছে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা। একই চিত্র দেখা গেছে পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র বাকেরগঞ্জ ডাকবাংলোর সামনে থেকে শুরু করে উপজেলা চত্বর পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পিচ-খোয়া উঠে গেছে। ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ। সামান্য বৃষ্টিতেই জমছে পানি। এর ওপর দিয়ে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।
এ অবস্থার চিত্র দেখা যায় বাকেরগঞ্জ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে, বাকেরগঞ্জ সংসদ সদস্য রতনা আমিন এর বাসভবন এর সামনে, সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের সামনে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের সামনে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর বাসভবনের সামনে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসের সামনের সড়কের। উপজেলা শহরের সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের এমন বেহাল দশায় প্রায় ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে চলাচলকারী হাজারো মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কগুলোর অধিকাংশ স্থানে পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। সড়কটি উভয় পাশে পিচ ও খোয়া উঠে দেবে গেছে। চলাচলের বেহাল অবস্থা। এখানে বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানিতে এ অংশ একাকার হয়ে যায়। কিছু কিছু স্থানে হাঁটু সমান পানি জমা হয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
ভরপাশা ইউনিয়নের অটোরিকশা চালক সায়েম বলেন, ছোট যানবাহন প্রায়ই উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা অসুস্থ মানুষের দুর্ভোগ দেখে কান্না আসে। পাঁচ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগছে আধা ঘণ্টা।
কাভার্ড ভ্যান চালক জসিম আহমেদ বলেন, গেল ৫ বছর যাবত এ এলাকার বাজারগুলোতে পণ্য দিতে আসি। সড়কের অধিকাংশ জায়গায় ছোট-বড় গর্ত। গাড়ি চলে হেলেদুলে। খানাখন্দে চাকা পড়লে গাড়ি তোলা দুষ্কর হয়ে যায়। আবার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। নাকাল অবস্থা। এই অবস্থায় গাড়ি চালাতে খুব কষ্ট হয়। এমন পরিস্থিতিতে পৌরবাসীর মাঝে নানান ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তাই সরকারের ইমেজ ধরে রাখতে দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয়রা।
কেএস