বর্ষা মৌসূমের শেষ পর্যায়ে। এসময় গাছের গাছের চারা রোপণ করলে গোড়ায় পানি না জমা, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশঙ্কা না থাকা এবং শিকড় পচে না যাওয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের লাগানোর আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বর্ষা-পরবর্তী গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় বলে পরামর্শও দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা। ঝালকাঠিতে বর্ষা মৌসুমের শেষের দিকে বিভিন্ন জায়গায় জমে উঠেছে চারা গাছের হাট।
চারা রোপণের এ মৌসুমে শহরের পশ্চিম চাঁদকাঠি (বাসন্ডা ব্রিজের পূর্ব ঢালে), রাজাপুর উপজেলা বাঘড়ি ও লেবুবুনিয়া হাট, নলছিটি উপজেলার ষাটপাকিয়া বাজার, বন্দর হাট এবং কাঁঠালিয়া উপজেলার আউড়া ও কৈখালী বাজারসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে চারার হাট বসেছে। সপ্তাহে দু’দিন ধরে এসব হাটে বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার ঔষধি, ফলদ, বনজ ও শৌখিনসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ।
এসব হাট ঘুরে দেখা গেছে, মেহগনি ও অন্যান্য বনজ গাছের চারা ৩০ টাকা হারে বিক্রি হলেও ফলদ চারা ২০০-২৫০টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। শৌখিনতার জন্য বিদেশি জাতের গাছের চারাও পাওয়া যায় এসব হাটে। তবে সেগুলোর দাম আরও বেশি। আর এসব চারা উৎপাদন হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নার্সারিতে। পার্শ্ববর্তী বানারিপাড়া উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা অনেকগুলো নার্সারি রয়েছে। নার্সারি মালিকরা ট্রলার ও নৌকাযোগে হাটে এসব চারা নিয়ে আসেন।
হাটে চারা কিনতে আসা জামাল হোসেন জানান, প্রতি বছর চারা কিনে লাগান। তবে বনজ চারাই বেশি কেনেন বলে জানান তিনি।
চারা গাছ ব্যবসায়ী মনমথ বিশ্বাস জানান, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন এ চার মাস গাছের চারা বিক্রি হয়। চার মাসে তিনি কমপক্ষে প্রায় দশ লাখ টাকার চারা বিক্রি করতে পারবেন। এতে তার লক্ষাধিক ব্যবসাও হবে। পরিবহন খরচ, হাটের ইজারা, শ্রমের মূল্য বেশি হওয়ায় খরচ পোষাতে দাম গত বছরের তুলনায় এ বছর একটু বেশি। জেলা বন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, বসতঘরের আশপাশে ফলদ ও শৌখিন গাছ এবং ফার্নিচার তৈরির জন্য বনজ গাছ দূরের জায়গায় লাগানো যেতে পারে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা বলেন, বর্ষার একদম শুরুতে চারা রোপণ না করাই ভালো। কারণ বৃষ্টির পানিতে প্রথম দিকে এক রকমের গরম গ্যাস মাটি থেকে নির্গত হয়, যা চারার জন্য ক্ষতিকর। তখন চারার শিকড় পচে গিয়ে বেশির চারাই মারা যায়। তাই বর্ষা-পরবর্তী গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় বলে জানান তিনি।
এসএম