ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনী বার্তায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মৃৎশিল্পীরা। এখন দম ফেলার সময় নেই তাদের। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরে মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা।
দুর্গাপূজার দিন গণনা, মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়। এই শারদীয় দুর্গা উৎসব শুরু হবে আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা শিল্পীরা কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে রাতভর চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। নিখুঁত হাতের কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তৈরি করছে প্রতিমা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, দেবী দুর্গা চলতি বছরের ১লা অক্টোবর ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে মহা ষষ্ঠীর দিনে পৃথিবীতে আসবেন, মহিশ অসুর কে বধ করার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সকল দুর্গতি নাশ করে ৫ই অক্টোবর দশমির মহাপ্রলয়ের দিনে দোলায় চড়ে আবার স্বর্গে ফিরে যাবেন। পাঁচ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠেয় পূজায় উপজেলার হাজার হাজার ভক্ত ও পণ্যার্থী শারদীয় দূর্গা উৎসব পালন করবে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। অনেক মন্দিরে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন প্রতিমা শুকানোর কাজ। তারপর দুর্গাপূজার শুরুর আগ মহূর্তে নিপুণ শিল্পীর কারুকাজে রং তুলির আচর দিয়ে প্রতিমাগুলোকে প্রাণবন্ত করা হবে। দেবী দুর্গার প্রতিমা ছাড়াও কার্তিক, গনেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী, অসুর, মহিষাসুরসহ মোট ১২ টি প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন মৃৎশিল্পীরা।
উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নের আরাজি উজ্জলকোঠা একতা ক্লাবের সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা তৈরীর কারিগর বীরগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা ফনি কর্মকারের সাথে কথা হয়।
তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতিমা তৈরীর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে আসছি। এ বছর প্রতিমার অর্ডার অন্যান্য বারের চেয়ে বেশি পেয়েছি শশুর বাড়ি এলাকা হওয়ায়। এখন মাটির ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে এর পরে রংয়ের কাজ করা হবে। এদিকে আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই সময় ঘনিয়ে আসায় কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে গেছে, যার কারণে সারাদিন কাজ করার পরে রাতেও কাজ করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে শিল্পীদের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণরুপে ফোটে ওঠছে দৃষ্টি নন্দন অধিকাংশ প্রতিমা। এ কাজে খুবই ব্যস্থ সময় পার করছেন তার সাথে থাকা মৃৎশিল্পীরা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ পীরগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল জানান,এবার উপজেলার ১১৯ টি পূজামন্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ৪ টি জায়গায় বিসর্জন প্রতিমা পানিতে ভাসানোর জায়গা তৈরি করা হয়েছে। মহামারী করোনার কারণে গত দু বছর দুর্গাপূজার আনন্দ অনেকটা ম্লান ছিল। পূজার সেই পুরনো সংস্কৃতি অনেকটা অগোচরে ছিলো সেই সময়।দেবী দূর্গা আসছেন অন্ধকার আচ্ছন্ন পৃথিবীকে আলোকিত করতে। ঢাক, ঢোল, শংখ ধ্বনী আর উলুধ্বনী দিয়ে দেবী দূর্গাকে বরণ করে নেয়ার অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভক্তরা।
কেএস