নীলফামারীতে আগাম আলু চাষ

নীলফামারী প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২, ০৪:২২ পিএম

দেশে আগাম আলু চাষে রোল মডেল ও সূতিকাগার খ্যাত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলার কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের আর্শিবাদপুষ্ট আগাম আলু চাষের ধুম পড়েছে। গ্রাম বাংলায় যখন উঁকি দিচ্ছে শীত, ঠিক তখনি উঁচু দাঙ্গা বেলে দোআঁশ মাঠগুলোতে ৫০থেকে ৫৫ দিনে উত্তোলন যোগ্য সেভেন জাতের আগাম আলুর বীজ রোপণে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এ তোড়জোড় যেন যার আলু যত আগে উঠবে সে কৃষক তত বেশি লাভবান হবেন। 

মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর চাহিদা থেকে ভোক্তার নিকট উপহার দিতে পারলে চড়া বাজার মূল্য পেয়ে দিগুণ লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা কৃষকের। প্রতি বছর আগাম আলু চাষে প্রান্তিক-মাঝারি কৃষক লাভবানও হন। এ বছরও অনুকূল পরিবেশে স্বল্প মেয়াদি আগাম আমন ধান ঘরে তুলে সেই জমিতে আগাম আলু বুননের জন্য জমিতে হালচাষ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ, হিমাগার থেকে বীজ আলু সংগ্রহ ও রোপণে মহাআয়োজন চলছে। এ আয়োজনে শত শত কৃষক হাজার হাজার ক্ষেতমজুর ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ আগাম আলু বুনন ও প্রস্ততে মাঠগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। সময়ের আগে আলু রোপণ আর এত প্রাণচাঞ্চল্য নজর কাড়ছে সবার।

এসময় দেখা যায়, রণচন্ডি ইউপির কুটি পাড়া গ্রামের আলু চাষি মোজাম্মেল ৫বিঘা,তরিকুল৫ বিঘা জমিতে আগাম আলু বুনছেন। তারা জানান, আগুর আলু উত্তোলন করতে পারলে ৭০ থেকে ৮০টাকা বাজার ধরতে পারবেন। যা গত বছর  ধান কাটার পর সেই জমির চাষাবাদকৃত আলু ক্ষেতে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বিঘায় লাভ করেন ৪০ হাজার টাকার উপরে।

তারা জানান, এ অঞ্চলের ডাঙ্গা জমিগুলো একদম উঁচু এবং বালু মিশ্রিত। ভারি বৃষ্টিপাত হলেও  তেমন কোন ভয় থাকেনা। তাই আগেভাগে দিগুণ লাভের আশায় আগাম আলু বুনছি।

বাহাগিলী ইউপির উত্তর দুরাকুটি গ্রামে আলু চাষি আনারুল ইসলাম জানান, গত বছর ৩বিঘা জমিতে ৩৯ বস্তা ফলন পান। যা উত্তোলন করে ৯০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করে খরচ বাদে ২ লাখ টাকা আয় করেন। এবার ধান কাটার পর ১০বিঘা জমিতে আলু বুনছেন।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, চলতি বছর ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।যা গত বছরের চেয়ে ১শ হেক্টর বেশি। এবছর আগাম আমন ধানে রেকর্ড পরিমাণ ফলন পেযে কৃষক আগাম আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উঁচু জমিতে আলুচাষে কৃষককে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। নিচু জমিতে আবহাওয়া দেখে লাগানোর কথা বলা হচ্ছে। এ উপজেলার অন্যতম আকর্ষণ আগাম আলু ৫০ থেকে ৫৫ দিনে মধ্যে বাজারে চলে আসবে। এ বছরও চড়াবাজার মূল্য পেয়ে কৃষক পরিবারে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে এমন প্রত্যাশা করছেন তিনি। আগাম ধান,আগাম আলু চাষে এ জনপদে মঙ্গা এখন অতীত।

এসএম