আমার সংবাদে সংবাদ প্রকাশের পর

জলঢাকায় ভিজিডি কার্ডে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২, ০৭:০৩ পিএম

নীলফামারীর জলঢাকায় সংবাদ প্রকাশের পর ভিজিডি কার্ডের চাল বিতরণে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। গত ২৭ আগস্ট দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকায় ‘জলঢাকায় টাকা ছাড়া মিলছে না ভিজিডি কার্ডের চাল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকার্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান। 

সরেজমিনে তদন্ত করে চলতি মাসের ২০ সেপ্টেম্বর ইউ’পি সচিব এবং ট্যাগ অফিসার ছাড়াই চাল বিতরণে ভিজিডি কার্ডের সুবিধাভোগিদের কাছ থেকে বসতবাড়ীর কর ২০০ টাকা এবং অতিরিক্ত আরও ৬০ টাকা করে নেওয়ার সত্যতা পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পূরবী রানী রায়।

তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতাভুক্ত অসহায় মানুষদের নিকট হতে গ্রহণকৃত অতিরিক্ত ৬০ টাকা ফেরত প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শুধুমাত্র দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের নিকট বসতবাড়ীর কর আদায় না করে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল ও বিত্তবানদের নিকট হতে বিধি মোতাবেক বসতবাড়ীর কর আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে কৈমারী ইউ’পি চেয়ারম্যান সাদিকুল সিদ্দিকী সাদেকের নিকট ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। 

উল্লেখ্য, উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ড জিম্মি করে রশিদের মাধ্যমে বসত বাড়ির বাৎসরিক মূল্যের উপর ২০০ টাকা কর আদায় এবং কোন প্রকার রশিদ ছাড়াই খরচ বাবদ প্রত্যেক সুবিধাভোগিদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৬০ টাকা। রশিদের বাইরে নেওয়া ৬০ টাকা সুবিধাভোগিদের ভিজিডি কার্ডের সঞ্চয়ে জমা করার নিয়ম থাকলেও চাল বিতরণকালে ভারত সফররত চেয়ারম্যান সাদিকুল সিদ্দিক সাদেকের মনোনীত ব্যক্তি ২নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ সদস্য সুজা মিয়া ও মশিউর রহমান সে টাকা নিজের পকেটে রেখে দিয়ে ভিজিডি কার্ডের সঞ্চয়ের ঘরে ‘সঞ্চয় নাই’ লিখে দিয়েছেন।

এছাড়াও ভিজিডির চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার থাকার নিয়ম থাকলেও কৈমারী ইউনিয়নে মানা হয়নি সে নিয়ম। ট্যাগ অফিসার ছাড়াই গাবরোল সিদ্দিকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিতরণ করা হয় এসব চাল।

জানা যায়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশের গ্রামীণ দুঃস্থ মহিলাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাস্তাবায়িত সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির (ভিজিডি) আওতায় কৈমারী ইউনিয়নে ৩৫০ জন সুবিধাভোগি অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

এ বিষয়ে কৈমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদিকুল সিদ্দিকি সাদেকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান বলেন, তদন্তে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা পাওয়া গেছে, সেজন্য সংশ্লিষ্ট ইউ’পি চেয়ারম্যানকে অতিরিক্ত টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কেএস