সরকারি ঘর পাবার আশায় ১০ হাজার টাকা সুদে এনে স্থানীয় মেম্বারকে দেন প্রতিবন্ধী নারী বেদেনা আক্তার। কিন্তু দুই বছর পেরোলেও ঘর পাননি তিনি। এদিকে সুদের টাকা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। শেষে উপায়ন্তর না দেখে ফেসবুকে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন প্রতিবন্ধী বেদেনা আক্তার।
ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী নারী বেদেনা আক্তার (৫৭) নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের সেহড়াউন্দ গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দিনের মেয়ে।
আর অভিযুক্ত কলমাকান্দার কৈলাটি ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আল আমিন।
স্থানীয়রা জানান, বেদেনা আক্তার জন্মগতভাবেই একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। স্ট্রেচারে ভর করে চলাফেরা করেন। সেকারণে তার বিয়ে হয়নি। বাবার দেওয়া এক শতক ভিটে ছাড়া তার আর কিছুই নেই। ভাইয়ের ঘরে বসবাস করেন। মানুষের সাহায্যে দিন চলে তার। শেষ বয়সে সরকারি একটি ঘরের আশায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আল আমিনের দ্বারস্ত হন। কিন্তু আল আমিন ১০ হাজার টাকা দাবি করেন তার কাছে। এতে সুদে এনে ১০ হাজার টাকা মেম্বারকে দেন বেদেনা। কিন্তু দুই বছর পার হলেও ঘর পাননি তিনি। এতদিনে সুদের টাকা দ্বিগুণ হয়েছে। এ ঘটনায় মেম্বার আল আমিনের শাস্তি দাবি করেন স্থানীরা।
ভুক্তভোগী মোছা. বেদেনা আক্তার জানান, প্রতিবন্ধী মানুষ কষ্ট করে চলি। একটা সরকারি ঘরের আশায় মেম্বারের কাছে যাই। মেম্বার বলে- বিনা টাকায় ঘর পাওয়া যায় না। ঘরের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন মেম্বার। পরে ১০ হাজার টাকা সুদে এনে দেই। কিন্তু আজ-কাল বলে ঘুরাতে থাকেন মেম্বার। দুই বছর পার হলেও ঘর পাইনি। অবশেষে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানাই। বিষয়টি জেনে তিনি মেম্বারকে ভীষণ বকাঝকা করেন। পরে কয়েকদিন আগে মেম্বার আট হাজার টাকা পেরত দিয়েছেন। তবে আমার আসল দুই হাজার ও সুদের টাকা ফেরত পাইনি। এ ঘটনায় মেম্বারের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আল আমিন বলেন, ঘর দেওয়া বা টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার মান সম্মান নষ্ট করার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজন বেদেনাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করিয়েছে।
কৈলাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বেদেনা আক্তারের অভিযোগটি সত্য। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেম্বারকে শাসিয়েছি।
কলমাকান্দার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম বলেন, বেদেনা আক্তারের বিষয়টি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএস