ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ইতিবৃত্ত

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২২, ০২:৫৯ পিএম

কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জংগল বাড়ি ছিল বাংলার বার ভুঁইয়ার প্রধান মসনদে আলা ঈশা খাঁ‍‍`র দ্বিতীয় রাজধানী। তারই পঞ্চম অধস্তন বংশধর হয়বৎ খাঁ জংগলবাড়ি থেকে এসে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার এক কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে বসতিস্থাপন করেন ও নিজ নামের সাথে মিল রেখে এলাকার নামকরণ করেন হয়বতনগর।

হয়বত খাঁ‍‍`র তৃতীয় বংশধর ছিলেন মাসুদ খাঁ এবং মাসুদ খাঁ‍‍`র তৃতীয় পুত্র দেওয়ান জুলকদর খাঁ বা জুলকরণ খাঁ (পাগলা সাহেব ) জুলকরণ খাঁ একজন বিশিষ্ট ওলি ছিলেন। তিনি প্রথমে হয়বত নগরে তার নিজ বাড়ির আংগিনায় যে ঘরটিতে বসে এবাদত করতেন সেটি ছিল শিয়া সম্প্রদায়ের এবাদত খানা বা হোসনে দালান। মসনদে আলা ইশাখাঁ ছিলেন শিয়া মতবাদে বিশ্বাসী।

এক গম্বুজ বিশিষ্ট হোসনে দালালটির মূল নকশা ঠিক রেখে, কেবলা নিদর্শন করে ও একটি মিম্ভর তৈরি সহ সংস্কার করে মসজিদে রুপান্তরিত  করেন। এটিই কিশোরগঞ্জের সর্ব প্রথম মসজিদ বলে মনে করা হয়।

মসজিদের সামনেই রয়েছে হয়বৎ খাঁ পরিবারের পারিবারিক কবরস্থান। হয়বতনগর আলীয়া মাদ্রাসার পশ্চিমে অর্থাৎ বড় গোরস্থানের  মাঝামাঝি পশ্চিমে অবস্থিত যে কবরস্থানটি রয়েছে সেখানেই চির নিদ্রায় শায়িত আছেন তথযুগের শ্রেষ্ঠ সুফী সাদক জুলকদরখাঁ পাগলা সাহেব।

পাগলা সাহেব একজন আধ্যাতিক জগতের মানুষ ছিলেন বলে জমিদারি রেখে নরসুন্দা নদীর পারে একটি হুজরাখানা ও ছোট আকারে মসজিদ নির্মাণ করে এ সর্বদা অবস্থান করতেন ও ইবাদতে মশগুল থাকতেন, যা আজ পাগলা মসজিদ নামে পরিচিত। বিগত শতকের শেষাংশেও এই মসজিদটি অনেকে প্রত্যক করেছেন।

পাগলা সাহেব নির্মিত মসজিদটি ঘিরে আজ কোটি কোটি টাকার মানত আসলেও কিশোরগঞ্জের প্রথম মসজিদ ও পাগলা সাহেবের কবর বা মাজারটির সংস্কার করার কথা কেহই ভাবেন না, যার সংস্কার অতি আবশ্যক।

এআই