পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২২, ০৩:১৪ পিএম

পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে ১২ লাখ টাকা যৌতুক গ্রহণ এবং আরও ২০ লাখ টাকা যৌতুক না দেওয়ায় স্ত্রী নির্যাতন ও ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে অনলাইন প্রেসক্লাব কাউনিয়া রংপুর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিচার চেয়ে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এ অভিযোগ করেন। তিনি পীরগাছা উপজেলার খামার নয়াবাড়ি গ্রামের এন্তাজ আলীর মেয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে ইয়াছমিন আক্তার অভিযোগ করেন, রংপুর কোতয়ালী থানার মধ্য পীরজাদাবাদ গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে আনোয়ারুল ইসলামের সাথে ২০১২ সালের ২১ জুলাই ইসলামী শরিয়াত মোতাবেক এবং রেজিঃ কাবিননামা মূলে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বাবার পেনশনের ১২ লাখ টাকা যৌতুক গ্রহণ করেন পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম। ১০ বছর দাম্পত্য জীবনে তাদের কোন সন্তান নেই। কুড়িগ্রামের চিলমারী থানার ওসি থাকাকালে যৌতুকের দায়ে ইয়াছমিন আক্তারের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। নানা অজুহাতে স্বামীর অমানবিক আচরণ ও নির্যাতনের এক পর্যায়ে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশ রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অনুকূলে লিখিত অভিযোগ করেন ইয়াছমিন আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে ইয়াসমিন আরও জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিআইজি মহোদয়ের নির্দেশে গত ১৫ মার্চ ২০২২ অ্যাডিশনাল ডিআইজি, পুলিশ সুপার রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উলিপুর সার্কেল কুড়িগ্রাম সম্মিলিত মধ্যস্থতায় তাদের সন্দেহ, ভুল বোঝাবুঝি, মনোমালিন্য ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিয়ে উভয়ের সমস্যা ও আলোচনা শেষে নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পের মাধ্যমে আপোষনামা করে দেন। পরবর্তিতে যৌতুকলোভী ওসি আনোয়ারুল ইসলাম পুনরায় ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করেন এবং পূর্বের ন্যায় নির্যাতন করে ২০২২ সালের ১৯ মার্চ ইয়াছমিন আক্তারকে বাসা থেকে বের করে দেন।

তিনি আভিযোগে আরও জানান, এরপর বাধ্য হয়ে ২৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে স্বামী, ভাসুর ও ননদের বিরুদ্ধে রংপুর কোতয়ালী মেট্রো থানার আমলী আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন ইয়াছমিন আক্তার। পরে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ১১ মে ২০২২ কোতয়ালী থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। থানার মামলা নং ২২, জিআর ৩২৫/২০২২ এ মামলা রংপুর পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। কিন্তু ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার তদন্তকারী পিবিআই এসআই যোবায়দুল ইসলাম ও তার স্বামী ওসি আনোয়ারুল ইসলাম যোগসাজগে মামলাটি নিয়ে বিভিন্ন ধরণের টালবাহানা করছেন।

এছাড়াও ইয়াছমিন আক্তার নামে ভুয়া আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাম্পত্য ছবি ও এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে নানা বিভ্রান্তি এবং অভিযোগ গুলো মিথ্যা ভাবে প্রমাণ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বর্তমানে কক্সবাজার এপিবিএন/১৪ কমান্ডে কর্মরত রয়েছেন। অভিযুক্ত আসামীগণ যৌতুকলোভী আইন অমান্যকারী নিষ্ঠুর প্রকৃতির লোক। সুষ্ঠু ও ন্যায় পেতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলামসহ অন্য আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানান ভুক্তভোগী ইয়াছমিন আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে ইয়াছমিন আক্তারের স্বজনরাসহ উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কেএস