ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে মাদ্রাসা সুপার কারাগারে

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২২, ০৩:১৭ পিএম

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে শালিয়ারা আহম্মদিয়া বাজলুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেনকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। তিনি নাগরপুর উপজেলার বাটরা গ্রামের সোনা উল্যাহ মিয়ার ছেলে।

রোববার (১৬ অক্টোবর) বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ও তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ পূর্বক এ আদেশ প্রদান করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২৩ জুলাই ২০২০ সালে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় নিরাপত্তা কর্মী পদে লোক নিয়োগের ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শালিয়ারা আহম্মদিয়া বাজলুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। তখন অভিযোগকারী শাররীক প্রতিবন্ধী মোঃ আরজু সিকদারের (৭০) পুত্র মোঃ ইয়ামিন মিয়া উক্ত পদের প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেন।

আবেদনের পর অত্র মাদ্রাসার সুপার অভিযোগকারীকে আশ্বস্ত করে বলেন, তিনি তার সন্তানকে চাকুরী দিতে পারবেন। তবে তাকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। প্রতিবন্ধী কৃষক বাবা গোয়ালের চাষের গরু বিক্রি করিয়া তার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সরল মনে তার হাতে প্রথম পর্যায়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা তুলিয়া দেয়। এ সময় মামলার ২ নাম্বার আসামি মোঃ হাবিবুর রহমান (অত্র মাদ্রাসার শিক্ষক) সহযোগিতায় মামলার স্বাক্ষীগণের সামনে অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার অভিযোগকারীর বাড়ি হতে টাকা গুনিয়া ব্যাগে ভরে নিয়ে যায়।

অভিযোগকারীকে আশ্বস্ত করে যে, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ও বাকী ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নিয়োগ পরীক্ষা শেষে প্রদান পূর্বক তার চাকুরী নিশ্চিত করা হবে। পরবর্তীতে ২৮ ডিসেম্বর ২০ তারিখে স্বাক্ষাতকারের প্রবেশ পত্র পান ও ৮ জানুয়ারী ২১ তারিখে সাক্ষাতকার বোর্ডে উপস্থিত হইয়া সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদান করেন। সাক্ষাতকার পর্ব সন্তোষজনক হওয়ায় অভিযোগকারী অতি কষ্টে বাকি ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নানা টালবাহানা শুরু করেন। উল্লেখিত পদে চাকুরী বা প্রদেয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ দিবে না বলে অস্বীকার করেন। অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন  বিশ্বাস ভঙ্গ, টাকা আত্মসাৎ করেছে। এতদ বিষয়ে মোকাম টাঙ্গাইল বিজ্ঞ সিনিঃ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী (নাগরপুর) আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নং ১৫৩/২০২২ সি.আর।

অভিযোগকারী মোঃ আরজু মিয়া জানান, আমি ও আমার পরিবার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার সন্তানের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মাদ্রাসা সুপার ঘুষ নিয়ে চাকরিও দিচ্ছে না আবার টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। বাধ্য হয়েই বিজ্ঞ আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছি। আমি একজন শাররীক প্রতিবন্ধী কৃষক। পালের গরু ছাগল বিক্রি করে তাকে সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে টাকা দিয়েছিলাম।

মামলার ২নং আসামি মোঃ হাবিবুর রহমান জামিনে মুক্ত হওয়ায় আমি চিন্তিত। তবে বিজ্ঞ আদালতের প্রতি আমার দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস আছে আমি ন্যায় বিচার পাবো।

কেএস