সময়ের পরিবর্তনে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে কাঠের ঘানিতে বানানো খাটি সরিষার তেল। গ্রামবাংলার অতি পরিচিত দৃশ্যটি এখন আর খুব একটা চোখে পড়ে না। বৈদ্যুতিক যন্ত্রেই করা হচ্ছে তেল ভাঙ্গানোর কাজ। তবে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের বামনভাগ গ্রামের মোঃ হানিফ প্রামানিকের বাড়িতে সাম্প্রতিক সময়ে শুরু করেছেন ঘোড়া দিয়ে খাটি সরিষার তেল উৎপাদন। অবশ্য এক সময় বুকে জোয়াল বেধে কাঠের ঘানি টেনে খাটি সরিষার তেল বের করা হতো বলে জানান এক গৃহিণী। এরপর বেশ কয়েক বছর গরুর গাড়ে ঘানি আর চোখের ওপর মোটা কাপড় দেওয়া অবস্হায় চলতো কলুর বলদ। বর্তমানে ঘোড়া দিয়ে অনুরুপ ভাবে বের করা হচ্ছে খাটি সরিষার তেল। এ তেলের ঝাঁজালো গন্ধে চোখে পানি এসে যায়। পূরাতন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই কাজ করছেন হানিফ পিলার হাউজের মালিক মোঃ হানিফ প্রামানিক। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাঠের ঘানির সাহায্যে ফোঁটা ফোঁটায় নিংরানো খাটি সরিষার তেল পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। অনেকে আবার খাটি তেলের আশায় ছুটে আসছে ঘানিতে। তেল ক্রয় করতে আসা বেশ বয়েকজন ক্রেতা জানান, ঘানিতে ভাঙ্গানো এই তেলের ওপরে আর কোনো তেল নেই। মার্কেটিং আর চমৎকার বিগ্যাপনের জন্য সবাই ভুলতে বসেছেন আসল-নকলের পার্থক্য। তবে হানিফ প্রামানিকের ঘানিতে প্রতিদিন আসে আগ্রহী ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। এদিকে মোঃ হানিফ প্রামানিকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, যান্ত্রিক যুগে সবাই ভেজাল পণ্যেরর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে স্বাস্হ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন। তাই ভেজালমুক্ত পণ্য পরিবেশনের লক্ষ্য নিয়ে তেল উৎপাদন করছি। ক্রেতাদের খুব ভালো সারাও পাচ্ছি। তবে করোনার কারনে থমকে পরেছিলাম। সেই গাড়তিটা এখনো পুশিয়ে নিতে পারিনি। সরকারি ভাবে ঝ্রন পেলে ঘানি পরিচালনা করতে আরও সহজ হবে বলে জানান উপজেলার বামনভাগ গ্রামের মোঃ হানিফ প্রামানিক।
ইএফ