বাধা ঠেলে সিলেটমুখী বিএনপির কর্মীরা

সিলেট ব্যুরো প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২২, ০৪:৪৭ পিএম

সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আগামীকাল শনিবার। বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এরইমধ্যে সমাবেশস্থলে সমবেত দলটির নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরের পরপরই সমাবেশস্থল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে।

সমাবেশে আসা বিএপির নেতকর্মীরা অভিযোগ করেছেন আসার পথে তাদের নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকরা যানবাহন আটকে দিয়েছে।

বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিভিন্ন স্থানে সমাবেশের আগে যান চলাচল বন্ধ করার ঘটনায় আগে থেকেই তারা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। তারা সমাবেশের দুইদিন আগে থেকেই সিলেটে আসতে থাকেন।

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার নেতা-কর্মীরা বাস-ট্রাকে সিলেটে আসতে থাকেন। দুরদুরান্ত থেকে আসা নেতা-কর্মীরা নগরের বিভিন্ন সেন্টারে রাতযাপন করেছেন। কেউ কেউ তিনদিন আগে থেকেই সমাবেশস্থলে তাঁবু টানিয়ে থাকছেন।

এসমাবেশ ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মাঝে কিছুটা উত্তপ্ত অবস্থা থাকলেও এখন পর্যন্ত বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগের চার জেলায় সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

শুক্রবার সমাবেশস্থল নগরের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের পূর্ব পশে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মাঠ ও মাঠের বাইরে লাগানো হয়েছে শতাধিক মাইক। আলোকসজ্জা হয়েছে পুরো মাঠজুড়ে। নারীদের বসার জন্য আলাদা স্থান করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের রাতযাপনের জন্য মাঠের এক পাশে ছোট-বড় একাধিক প্যান্ডেল বানানো হয়েছে। 

এছাড়া সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে আলাদা প্যান্ডেল। মাঠের পেছনে রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে তদারকি কমিটি সমাবেশে নিরাপত্তা দেখভাল করছে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া বিএপির কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন।

সিলেট সিটির মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সমাবেশ বাধাগ্রস্থ করতে সরকার সব চেষ্টাই করছে। শ্রমিক নেতাদের চাপ দিয়ে সমাবেশের দিন পরিবহণ ধর্মঘট ডাকানো হয়েছে। এই সমাবেশের মাধ্যমে আবারো প্রমাণ করবে সিলেট বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, মাঠের প্রস্তুতিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন। দুরদুরান্তের নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবার রাতেই সিলেটে চলে এসেছেন। কোনো বাঁধা বিপত্তিতে জনজোয়ার ঠেকানো যাবে না। এই সমাবেশ থেকে সিলেটের নেতারা নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করবে।

চার জেলায় পরিবহণ ধর্মঘট
সমাবেশকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগের চার জেলায় সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়েছে, ৩৬ ঘণ্টার এ ধর্মঘট চলবে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। কেবল সিলেট জেলায় সমাবেশের দিন সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট চলবে। জেলা বাস মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন দাবিতে পৃথকভাবে এ ধর্মঘট পালন করছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গণসমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে বাসমালিক ও শ্রমিকদের ধর্মঘট ডাকতে সরকার বাধ্য করেছে। যদিও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের সব কটি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদানসহ চার দফা দাবিতেই তাদের এ পরিবহণ ধর্মঘট।

এআই