নানা প্রকার আবিষ্কার নিয়ে হাজির হয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। উদ্দেশ্য শিক্ষা মেলা। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে তাদের নিজস্ব আবিষ্কার তুলে ধরার জন্য। কেউ পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ ও পানির অপচয় রোধ ও বনায়ন, কেউ সামুদ্রিক পানির ডেউ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, কৃত্রিম রোবট তৈরি, পেট্রোল আর পানি দাড়া গ্যাস তৈরি, বিদ্যুৎ অপচয় রোধে করনীয়, পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলার কৌশলে ডেমো তৈরি, সাম্প্রতিক সমস্যা ও করণীয়, কৃষিতে কীটনাশক ব্যাবহারের বিকল্প পদ্ধতি, বায়োগ্যাস প্লান কেউ দেশীয় অর্থনীতিতে স্বল্প খরচে প্রযুক্তি ও পরিবেশ বান্ধব স্বপ্নের শহর নির্মাণের কৌশল, বজ রিসাইক্লিন পদ্ধতি, বায়ু দূষণে করনীয়। কেউবা আবিষ্কার করেছেন কাদা থেকে বিদ্যুৎ তৈরি। এমন সব অভিনব আবিষ্কার নিয়ে খুদে বিজ্ঞানীরা হাজির হয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুর ৪৪ তম বিজ্ঞান ও শিল্পপ্রযুক্তি মেলায়।
নাটোরের গুরুদাসপুরে শনিবার (২৬ নভেম্বর) উপজেলার শহীদ মিনার চত্বরে দিনব্যাপী এই বিজ্ঞান ও শিল্পপ্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজ, থেকে অংশগ্রহণ করেছেন মীম, মৌলি ও তার দল। তাদের প্রজেক্টের নাম “দেশীয় অর্থনীতিতে স্বল্প খরজে প্রযুক্তি ও পরিবেশ বান্ধব স্বপ্নের শহর নির্মাণের কৌশল”। মীম জানান, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার কথা মাথায় রেখেই আমরা এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করেছি।পলিথিনের পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব পাটের ব্যাগ ব্যাবহার। ডাস্টবিনের আর্বজনা রিসাইকেলিংয়ের ব্যাবহার করেছি, ধুঁয়ার শহরকে বায়ু দূষণ ও যানজট মুক্ত এবং যানবাহনে বিকল্প ব্যবহার, উড়াল এম্বুলেন্স তৈরির পদ্ধতি গন সচেতনতায় বাসা বাড়ির ছাদে বৃক্ষ রোপণ পদ্ধতির কৌশল দেখিয়েছি।
মশিন্দা মডেল ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দেখান ,কারখানায় আগুনের ধোয়া বের হলেই বাতি জ্বলবে, ফায়ার অ্যালার্ম বাজবে। বেগম রোকেয়ার শিক্ষার্থীরা দেখিয়েছেন বিদ্যুৎ ও পানির অপচয়রোধের পদ্ধতি। পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেখিয়েছেন স্বল্প ব্যয়ে পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন। খুবজীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেখিয়েছেন অসান পাওয়ার প্লান্ট তৈরির কৌশল। বিসিএস এস সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা বিশ্বেও সাম্প্রতিক কিছু সমস্যার বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাধান।
জাতিয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় অংশগ্রহণ করেন উপজেলার সরকারী বিসিএসএস কলেজ, সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া স্কুল এন্ড কলেজসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিজ্ঞান মেলায় ১২টি স্টলে খুদে শিক্ষার্থীদের এসকল আবিস্কার দেখানো হয়।
খুদে বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন আবিষ্কারের প্রদর্শনী দেখার জন্য কৌতূহলী দর্শনার্থীরা ভিড় করেছেন স্টলগুলোর সামনে। প্রভাষক মিতা রানী দাস (৩০) এসেছেন তার আট বছর বয়সী ছেলে তারাভ্র দামকে নিয়ে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান মেলা বাচ্চাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এতে নতুন প্রজন্ম বিজ্ঞান মনষ্ক ও সৃষ্টিশীল হয়ে উঠবে। মেলা দেখতে এসেছেন গৃহিণী জবেদা বেগম (৪০)। তিনি দুঃখ করে বলেন, আমি সায়েন্সের ছাত্রী ছিলাম। আমাদের সময় এমন সুযোগ পাইনি। পেলে অনেক ভালো করতাম। মেলায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং স্বশিক্ষিত উদ্ভাবকরা তাদের ২৫টির অধিক প্রকল্প নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। মেলায় ৪টি স্তরে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি, ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণি, একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং স্বশিক্ষিত উদ্ভাবক ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও খুদে বিজ্ঞানী তাদের প্রকল্পগুলো প্রদর্শন করছেন।
এসময় মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, সম্মানিত অতিথি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সাইদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যাবণী রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড.আনিসুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আলাল শেখ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকসানা আকতার লিপি, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ওয়াহেদুজ্জামান প্রমুখ।
এসএম