বিএনপি ঘোষিত রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ আগামী ৩ ডিসেম্বর শনিবার রাজশাহীর মাদ্রাসামাঠে অনুষ্ঠিত হবে। আর এই সমাবেশটি হবে ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সমাবেশ। সমাবেশকে কেন্দ্র করে এই বিভাগের ৮ জেলায় মামলা গ্রেফতার শুরু করেছে পুলিশ অভিযোগ বিএনপি নেতাদের। ডাকা হয়েছে পরিবহণ ধর্মঘট। এদিকে সমাবেশ সফল করতে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা পার করছেন ব্যস্ত সময়। প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন দিনরাত। লিফলেট বিতরণ করছেন জনসাধারণের মাঝে, করছেন প্রতিদিন প্রচার মিছিলও। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিসহ নানা ইস্যুতে সারাদেশে ১০টি বিভাগীয় গণসমাবেশের ডাক দেয় তারা। নবম সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে।
সমাবেশ সফল করতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক চলছে দফায় দফায়। বিএনপি নেতারা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন রাজশাহীর সমাবেশ ঠেকাতে সরকার পুলিশ দিয়ে একর পর এক মামলা করছেন তাদের নামে। গ্রেফতার করেছে রাজশাহীর সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফাসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে। পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে সমাবেশ বাঞ্চাল করতে। কিন্তু কোন বাধায় সমাবেশ ঠেকাতে পারবেনা সরকার।
রাজশাহীর বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে আমার সংবাদের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে বিভাগীয় সমাবেশ সমন্বয় কমিটির দলনেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, রাজশাহীর সমাবেশ হবে ঐতিহাসিক সমাবেশ। সমাবেশ সফল করতে আমরা সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছি। সমাবেশ সমন্বয় কমিটির উপদেষ্টা ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবার হাসান মাহমুদ টুকু, প্রধান সমন্বয়ক রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ ৮ জেলার নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় সভা হয়েছে। দলের সকল পর্যায়ের জনশক্তি ঐক্যবদ্ধ আমরা সমাবেশের মধ্যে দিয়ে এই অবৈধ স্বৈরচার সরকারের পতন ঘটাবো।
সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, বিএনপির সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ গুলো বাঞ্চাল করার জন্য পরিবহণ ধর্মঘট করেছে সরকার তাতে ঠেকাতে না পেরে রাজশাহীতে নতুন কৌশল হিসেবে মামলার পথ বেছে নিয়েছে। মাত্র কয়েকদিনে ৫০ টিরও বেশি মামলা করেছে পুলিশ, হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা-গায়েবি মামরা করছে। বাড়িতে বাড়িতে দিনে রাতে পুলিশ তল্লাশি গ্রেফতার করছে। তিনি পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন আপনারা পতন মুখি সরকারের হয়ে জনগণের সাথে অন্যায় করা থেকে বিরত থাকুন সরকারের অবৈধ কাজের ভাগিদার হবেন না। পরিবহণ ধর্মঘটের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ধর্মঘটের কোন প্রভাব পড়বেনা সমাবেশে যে কোন মূল্যে সমাবেশে মানুষ উপস্থিত হবে, কারণ এ সমাবেশ এখন বিএনপির শুধু নয় সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনারা আইনের মধ্য থেকে নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করুন। বাড়াবাড়ি করলে র্যাবের মতো আপনারাও স্যাংশনের মধ্যে পড়বেন। বাড়াবাড়ি করলে বিচারের আওতায়ও ভবিষ্যতে আসতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা চাঁপাইনববাগঞ্জ শিবগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান মিঞা বলেন, পুলিশ সমাবেশ ঠেকাতে মাঠে নেমেছে, আমার জেলার ৫টি থানায় মামলা হয়েছে। দলের মিটিং থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করে গোপন মিটিংয়ের অভিযোগ এনেছে, বিএনপি কোন গোপন দল নয়। সমাবেশ সফল করে জনগণ প্রমাণ করবে এ অবৈধ সরকারের মুখ তারা আর দেখতে চায়না।
বিএনপি রাজশাহী মহানগরীর সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ বলেন, মাদ্রসা মাঠে সমাবেশের মৌখিক অনুমতি পেয়েছেন, তবে ১ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় অনুষ্ঠানিকভাবে মাঠ বুঝে পাবেন সমাবেশের কার্যক্রম শুরুর জন্য।
এদিকে সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে ১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সড়ক পরিবহণ মালিক শ্রমিক পরিষদ। বিভাগীয় সড়ক পরিবহণ মালিক-শ্রমিক পরিষদের সভাপতি সাফকাত মুঞ্জর বিপ্লব এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেন। থ্রিহুইলারসহ সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে ১ ডিসেম্বর থেকে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।
এসএম