সরকারি স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষায় অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২, ০২:৪৩ পিএম

নীলফামারীর জলঢাকায় বার্ষিক পরীক্ষার নামে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই নিজের ইচ্ছাই শ্রেণিভেদে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন তিনি। ঘটনাটি উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের শৌলমারী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সরেজমিনে ওই স্কুলে গিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ধীরাজ, জান্নাতি এবং দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী গোবিন্দ, মহেদ হাসান মুন্না, লামিয়া আক্তার লাবনি বলেন, ‘বার্ষিক পরিক্ষার জন্য স্কুলের ম্যাডাম আমাদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে চেয়েছিল, তাই আমরা সে টাকা জমা দিয়েছি।’

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী কনা রানি রায়, চতুর্থ শ্রেণির সাগর, বিশাল চন্দ্র রায়, রজিত চন্দ্র, হৃদয় চন্দ্র এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকসানা বলেন, স্কুলের স্যার বার্ষিক পরিক্ষার জন্য আমাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০ টাকা চেয়েছিল, আমরা ৫০ টাকাই জমা দিয়েছি।

জানা যায়, ওই স্কুলে মোট ৩৬৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩২২ জন। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে ২৮ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৫০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৬৯ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৬০ জন, চতুর্থতে ৭০ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ৪৫ জন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করবেন। তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ক্লাস্টারের একাধিক প্রধান শিক্ষক জানান, এবারের বার্ষিক পরিক্ষার প্রশ্নপত্রসহ যাবতীয় খরচ স্লিপের টাকা থেকে বহন করা হবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

বার্ষিক পরিক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে শৌলমারী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেন, উত্তোলনকৃত টাকা দিয়ে পরিক্ষার খাতাপত্র নেয়া হবে।

এ বিষয়ে শৌলমারী ক্লাস্টারে দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, বার্ষিক পরিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই, দ্রুত টাকা ফেরতের নির্দেশ দিচ্ছি, আর প্রধান শিক্ষকের এমন অনিয়মের কারণে তাকে শোকজ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুর মোহাম্মাদ বলেন, সরকারি বরাদ্দ থেকে বার্ষিক পরিক্ষার সকল খরচ বহন করা হবে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

কেএস