শনিবার রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ

নানা বাধা পেরিয়ে গণসমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা

রাজশাহী প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২, ০৬:২৪ পিএম

শনিবার (২ নভেম্বর) রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হচ্ছে বিএনপি ঘোষিত ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠিত শেষ সমাবেশ। রাজশাহীর এ সমাবেশকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা, সমাবেশ ঠেকাতে তিনদিন আগেই ডাকা পরিবহন ধর্মঘট, পঞ্চাশটির বেশি মামলা ১৩শ অধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, পুলিশি হয়রানি সহ পার করতে হয়েছে নানা বাধা। এসব কিছু উপেক্ষা করে অসংখ্য নেতাকর্মী ও জনগণ উপস্থিত হয়েছে সমাবেশে।

বুধবার রাত থেকেই রাজশাহীর ৮ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন সমাবেশস্থলের আশপাশে। শুক্রবারে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এসে উপস্থিত হন রাজশাহীর মাদ্রসা মাঠের আশপাশে। বিভিন্ন জেলা থেকে সমাবেশে আগত লোকজন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নেয়। এছাড়াও পদ্মারপাড়সহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে রাত যাপন করেন তারা।

দিনভর খণ্ড খণ্ড মিছিল আর শ্লোগানে উত্তাল রাখেন সমাবেশস্থল। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরেপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্লোগান দিতে দেখা যায়।

রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাটোর নওগাঁ জয়পুরহাট পাবনা বগুড়া সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা বলছেন, সমাবেশের তিনদিন আগেই সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন। আমাদের অনেকের নামে মামলা করেছে, আমাদের ভাইদের গ্রেপ্তার করেছে। আমাদের দমাতে পারেনি, আপনারাই দেখেন সব বাধা পেরিয়ে আমরা রাজশাহীর সমাবেশে এসেছি। আমরা পায়ে হেটে, মটর সাইকেলে, সাইকেলে করে সমাবেশে এসেছি। সরকার আমাদের আটকাতে পারবে না। আমাদের দাবি আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, জিনিসপত্রের দাম কমাতে হবে, আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

আমার সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিভাগীয় সমাবেশের দলনেতা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেন, পরিবহন ধর্মঘট মামলা গ্রেফতার এসব কোন কিছুই আমাদের থামাতে পারবেনা। সমাবেশে বিভিন্ন বয়সি মানুষ বিশেষ করে মা বোনেরা অনেক কস্ট করে পায়ে হেঁটে সমাবেশে আসছে। ঢাকার বাইরের সমাবেশের সবচেয়ে এটি একটি বড় সমাবেশ হবে। সমাবেশে ১৫ লক্ষ মানুষ উপস্থিত হবে।

বিএনপির রাজশহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, সরকার যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতা ছাড়বে ততই জাতির জন্য ভালো। এই সরকার তিনটি টার্ম অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা সমাবেশে যতই বাধা দিচ্ছে আমরা ততই সফল হচ্ছি।

বিএনপির এ নেতা বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বেগম সেলিমা রহমান রাজশাহীতে চলে এসেছেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বিএরপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখবেন।

এদিকে পরিবহন ধর্মঘট তিনদিনে গড়িয়েছে, এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধরণ মানুষ। রাজশাহীর শিরোইল রেলগেট ভদ্রাসহ কোন স্টেশন থেকেই কোন যানবহন ছেড়ে যায়নি। রাজশাহীতে প্রবেশ করেনি কোন যানবহন। তবে রেল যোগাযোগ রয়েছে স্বাভাবিক। প্রচণ্ড চাপ বেড়েছে রেল যোগাযোগে।

অন্যদিকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আমাদের কোন বাধা নেই, কিন্তু জ্বালাও পোড়াও বা গাড়ি ভাংচুর বিদ্ধংশি কোন কর্মসূচি করলে কোন ছাড় দেয়া হবেনা।

তিনি আরো বলেন, সমাবেশে আগত মানুষ যদি কোন ধরনের গাড়ি ভাংচুর বা আগুন সন্ত্রাস করে তা হলে সমাবেশের আয়োজকদের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, সাহেব বাজার, জিরোপয়েন্টে আমাদের নেতাকর্মীদের অবস্থান থাকবে। রাজশাহীর মানুষের জানমালের কোনো ক্ষতি আমরা হতে দিতে পারি না।  

এআই