আধুনিক পৌরসভা গড়তে চান সালমা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২২, ১২:১৮ পিএম

মির্জাপুর পৌরসভাকে প্রয়াত মেয়র সাহাদৎ হোসেন সুমনের স্বপ্ন ও নাগরিক সুবিধা সম্পন্ন পৌরসভা হিসেবে গড়তে চান, তারই সহধর্মিণী বর্তমান পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার। স্বাধীনতার পর টাঙ্গাইলের প্রথম কোন নারী মেয়র থাকলে তিনি হচ্ছেন সালমা আক্তার। তার জন্মস্থান টাঙ্গাইল জেলার এলেঙ্গাতে। তার স্বামীর বাড়ি মির্জাপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড পোষ্টকামুরী ও দুই পুত্র সন্তানের জননী হচ্ছেন তিনি এবং নবগঠিত মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে সালমার স্বামী সাহাদৎ হোসেন সুমনের মৃত্যু হলে নির্বাচন কমিশন ৭ সেপ্টেম্বর তফসীল ঘোষণা করেন। অন্য দলের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় মেয়র নির্বাচিত হন। এই পৌরসভাটি ২০০০ সালে স্থাপিত হয়। বর্তমানে এটি ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভা।
পৌরসভার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় নির্বাচন কমিশন তৃতীয় ধাপে ৩০ জানুয়ারি তফসীল ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন ১২ হাজার ৪৭৮ ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত শফিকুল ইসলাম ফরিদ পান ২ হাজার ৯২৪ ভোট। রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বারের মত মেয়র নির্বাচিত হন সালমা আক্তার।

ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য আইইউআইডিপি প্রকল্পের কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ সম্পন্ন করেছন। তারমধ্যে হচ্ছে, ১নং ওয়ার্ড থেকে ৮নং ওয়ার্ডে যে সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে তা হচ্ছে ডাকবাংলো হতে আলহাজ্ব শফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আরসিসি, নাদুর বাড়ি হতে হাতেম টাউন বিসি, মুসলিম পাড়া হতে পাহাড়পুর বিসি, উত্তম ঘোষের বাড়ি হতে আরপি সাহার বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি, বাহিমহাটি পালপাড়া থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল বাইপাস ভায়া মহিলা কলেজ, এমপির বাড়ি হতে মেইন রোড পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলার দশ শহর প্রকল্পের যে সকল টেন্ডার হয়েছে যা চলমান রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে পৌরসভার ১ থেকে ৯নং ওয়ার্ডের মধ্যে প্রয়াত কাচ্ছেদ চেয়ারম্যানের বাড়ি হতে খালপাড় রাস্তা বিসি, থানা মোড় হতে কাকুলির মোড়, চুনিলাল সাহার গোডাউন পর্যন্ত আরসিসি, ঢাকা- টাঙ্গাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে কুমুদিনী হাসপাতাল পর্যন্ত ফুটপাতসহ আরসিসি রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, পৌর ভবন হতে মির্জাপুর সরকারি কলেজ ব্রিজ ও মহিলা কলেজ ব্রিজ পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা ও ড্রের নির্মাণ, বাওয়ার রোড মোড় হতে থানা মোড় পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, টেকনিক্যাল কলেজ হতে পৌর শেষ সীমানা পর্যন্ত আরসিসি, রফের মার্কেট হতে বুড়িহাটি, লেবু বাগান হতে হাতেম টাউন সেখান থেকে দুলালের বাড়ি পর্যন্ত চেইনেজে টু-ভন্ট (সাইজ ৩.৫০ মিটার বক্স কালভার্ট নির্মাণ, আন্ধরা থেকে মাঝিপাড়া, সাজু কাউন্সিলের বাড়ি থেকে ফরচু মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ চলমান রয়েছে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে আমার সংবাদকে তিনি বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থা মির্জাপুরে একটি প্রধান সমস্যা। আসলে সকলের সহযোগীতা ছাড়া এ সমস্যা সমাধান করা যাবে না। মির্জাপুরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্লাস্টিকের ডাস্টবিন ও নির্দিষ্ট স্থানে বড় আকারে ময়লা আবর্জনা স্তুপ করে রাখার ব্যবস্থা আছে এবং পৌরসভার গাড়ির মাধ্যমে তা অপসারণ করা হয়। আগামী দিন গুলোর কথা চিন্তা করে বর্জ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্য ডাম্পিং ব্যবস্থা করব।

মির্জাপুরে দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশার যানজটে মানুষ দিশেহারা। চাহিদার তুলনায় অটোরিকশা অনেক বেশী চলাচল করায় মির্জাপুর শহরের প্রধান রাস্তাগুলো প্রায় সময় যানজট লেগেই থাকে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারন মানুষ ও রাস্তার সামনে থাকা দোকানীরা।

যানজট নিরসনে আপনি এখন পর্যন্ত কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি হয়তো দেখেছেন ইতোমধ্যে শহরের মধ্যে লাইসেন্স ও লাইসেন্স বিহীন অটোরিকশা জব্দ করা হচ্ছে।  যাদের লাইসেন্স নাই তাদের নতুন করে লাইসেন্স করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। আমাদের একটা নির্দিষ্ট হিসাব অনুযায়ী অটোরিকশা মির্জাপুর বাজারে চলাচল করবে।

বহিরাগত অটোরিকশা মির্জাপুর পৌরশহরে ভরে গেছে এমনটা দাবি সাধারণ জনগণের। তাদের কারনেই যানজট বেশী হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বহিরাগত অটোরিকশা বন্ধের জন্য  আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং লাইসেন্স বিহীন অটোরিকশা জব্দ করার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পৌর মেয়র সালমা আক্তার আমার সংবাদের এই প্রতিবেদককে আরও বলেন, আসলে মির্জাপুর পৌরসভাটা একটা সুন্দর ও গোছানো একটি পৌরসভা। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর কাজ করে যাচ্ছি। মির্জাপুর বাসীকে একটি আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে এবং নাগরিক সুবিধা সম্পন্ন পৌরসভা গড়তে কাজ করে যাবো।

কেএস