জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সাভারে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার হামলায় আহত ফার্মেসি ব্যবসায়ী হোসেন আলী (৪০) এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ভোর রাতে মারা যান তিনি।
সকাল ১০টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিকেল অ্যান্ড কলেজের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী।
নিহত হোসেন আলী সাভার রাজফুলবাড়িয়ার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত শফিতুল্লার ছেলে। তিনি পেশায় একজন ফার্মেসি ব্যবসায়ী ছিলেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাফু, তার সহযোগী আনোয়ার হোসেন, মো. আব্বাস বাদল, কামরুল, নাঈম, আনিস ও মুন্নাসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন। তারা সবাই রাজফুলবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জমি নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম সাফু ও নিহতের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জেরে গত ২৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে হোসেন ও তার ভাই খোরশেদ রিকশায় রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় রামচন্দ্রপুর এলাকায় পৌঁছালে অভিযুক্তরা তাদের গতিরোধ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। এ সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে এনাম মেডিকেলের নিউরো আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোর রাতে হোসেন আলী মারা যান।
হোসেনের ছোট ভাই মোর্শেদ আলী বলেন, সেদিন আমিও ভাইয়ের সঙ্গে ছিলাম। আমাকেও ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। কিন্তু আমি বেঁচে গেলেও ভাইকে বাঁচাতে পারলাম না। সাফু তো সন্ত্রাসী আগে থেকেই, তার বিরুদ্ধে ১০-১২টা জিডিসহ একাধিক ভূমিদস্যু মামলা রয়েছে। উনি দলবল নিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেলল।
অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাফু বলেন, হোসেনের চাচাতো ভাইদের সঙ্গে আমার জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। কিন্তু হোসেনের সঙ্গে তো আমার কোনো বিরোধ নেই। আর হোসেনের সঙ্গে অনেক লোকের ঝামেলা রয়েছে। কে বা কারা তাদের মেরেছে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তারা অযথা আমাকে দোষারোপ করছেন।
ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তবে আইনগত বা সামাজিকভাবে কেউ অপরাধী হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাভার মডেল থানার ট্যানারি ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক জলিল বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হবে।
কেএস