ভোলায় প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। এরমধ্যে ৪টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে ও বাকি ১৫ টির কাজ আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের’ মাধ্যমে এসব বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে এ টাইপের ৭টি ও বি টাইপের ১২টি কিল্লা রয়েছে। এ টাইপের কিল্লাগুলো ৮৬ শাতাংশ এবং বি টাইপের ১’১৬ শতাংশ জমির উপর নির্মিত। দুর্যোগকালীন সময়ে এসব কিল্লায় কয়েক হাজার মানুষ ও গবাদী পশু আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া আরো ১৯টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসব মুজিব কিল্লার মধ্যে সদর উপজেলায় ৪টি, বোরহানউদ্দিনে ১টি, দৌলতখানে ২টি, তজুমদ্দিনে ৫টি, চরফ্যাশনে ৪টি ও মনপুরা উপজেলায় ৩ টি রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২টি ও চরফ্যাশন, মনপুরায় একটি করে মোট ৪টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। খুব শিগ্রই এগুলো চালু করা হবে। ভূমি থেকে ১০-১৪ ফুট উচ্চতায় প্রতিটি কিল্লা একতলা বিশিষ্ট হচ্ছে। এছাড়া এ ক্যাটাগরির কিল্লায় গবাদী পশু রাখা যাবে প্রায় সাড়ে ৪০০ ও ৬২৫ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। বি গ্রেডে প্রায় সাড়ে ৫০০ গবাদী পশু ও সাড়ে ৭০০ মানুষ দুর্যগকালীন সময় অবস্থান নিতে পারবে।
প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হাতেম আলী জানান, ইতোমধ্যে ১৯টি কিল্লার কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক কিল্লায় ২৪ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকছে। কিল্লার সামনে মাঠ রয়েছে। পাশাপাশি গবাদী পশুর আলাদা রাখার ব্যবস্থা, পুরুষ ও নারীরদের জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা, আলাদা টয়লেট, সুপেয় পানি, রান্না ঘর, হ্যারিং বনের রাস্তাসহ সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকছে এখানে। একইসাথে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আরো ১৯টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
জেল ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের পূর্বের সাইক্লোন সেল্টারগুলোতে মানুষ আশ্রয় নেয়ার পর গবাদী পশুর স্থান থাকতো সিমীত। তাই মানুষের পাশাপাশি চরাঞ্চলের গবাদি পশুর সুরক্ষায় সরকার এই উদ্যেগ নেয়। এসব মুজিব কিল্লার নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছাসে উপকূলীয় এই অঞ্চলের মানুষের সাথে গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি প্রাণীর প্রাণহানী রোধ করা সম্ভব হবে। জেলার দূর্গম চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী দূর্যোগ প্রবণ এলাকায় আগ্রাধীকার ভিত্তিতে এসব কিল্লা নির্মাণ হচ্ছে।
তিনি বলেন, পূর্বে জেলায় ১০টি মাটির কিল্লা ছিলো। সেগুলো আধুনিকায়নসহ নতুন এসব কিল্লা স্থাপন করা হচ্ছে। মুজিব কিল্লার চারপাশে ব্লক স্থাপন করে এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব মুজিব কিল্লা সক্রিয় রাখতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বারদের সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মেঘনা নদী বেষ্টিত মাঝের চরের বারইপুর এলাকায় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে মুজিব কিল্লার। খুব শিগগিরই এটি চালু করা হবে। এমন খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। তারা বলছে, এতে করে তাদের দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়বে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রব জানান, প্রত্যেক প্রাকৃতিক দূর্যোগে স্থানীয়দের গরু-মহিষ নিয়ে আতংকে থাকতে হয়। কারণ অতিরিক্ত জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে গবাদি পশু ভাসিয়ে নিয়ে যায় প্রমত্তা মেঘনা নদী। তাই মুজিব কিল্লা চালু হলে মানুষের সাথে গবাদি পশুও সুরক্ষিত থাকবে।
এআই