ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ৬নং রাজগাতী ইউনিয়নের কাশিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে সনদপত্র ছাড়াই কর্মরত আছেন দুইজন স্কুল শিক্ষক। দীর্ঘদিন যাবত উক্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় একজন এনটিআরসি এর নিবন্ধন সদনপত্রবিহীন ১৭ বৎসর যাবত এবং অন্যজন ভূয়া নিবন্ধন সনদপত্র দাখিলের মাধ্যমে ১০ বৎসর যাবত চাকরি করে আসছেন।
বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে শিক্ষাডটকম ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এবং গত ২রা নভেম্বর/২২ইং সংখ্যায় ঢাকার জাতীয় দৈনিক আমাদের বার্তায় প্রকাশিত হয়। শিক্ষকের এরকম অসৎ উপায়ে চাকরিতে যোগদানের বিষয়টি সুশীল সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, কাশিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ ১৫ নভেম্বর ২০০৯ সনে সিলেটের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২৪শে জুলাই ২০১২ সনে ক্রীড়া শিক্ষক পদে কাশিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকুরীতে যোগদান করে শিক্ষকতা পেশার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু তিনি উক্ত চাকুরীতে যোগদানের সময় ভূয়া (এনটিআরসি’র নিবন্ধন) সনদপত্র দাখিল করেন। যা পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তা ভূয়া সনদ পত্র হিসাবে প্রকাশ হয়। মো. হারুন অর রশিদের বাড়ি রাজগাতী ইউনিয়নের পাছঁদরিল্লা গ্রামে।
অপরদিকে অত্র কাশিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের কাম-কম্পিউটার পদে শামীম ভূইয়া নামে একজন শিক্ষক গত ১৮ ডিস্মেবর ২০০৫ সনে যোগদান করেন। কিন্তু তিনিও এনটিআরসি’র নিবন্ধন সনদ পত্র প্রদর্শন করতে পারেননি। যার ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার নিবন্ধন সনদ পত্র না পাওয়ায় ভূয়া সনদপত্রের তালিকায় নাম প্রদর্শন করেন।
অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মতিউর রহমান জানান, “এনটিআরসি নিবন্ধন সনদ সংক্রান্তের জটিলতার বিষয়টি জানতে পেরেছি। কিন্তুু চাকুরীতে যোগদাকালীন শিক্ষককের সনদপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ তো আমাদের নয়। এখন এটা কর্তৃপক্ষের বিষয়। তবে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান তিনি।”
তবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসি)’র সচিব মো. ওবায়দুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, “প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষক নিয়োগের যাবতীয় কাগজপত্র নিয়োগ চূড়ান্তের পূর্বে তা যাছাই-বাছাই না করেই নিয়োগ প্রদান করে থাকেন এবং পরবর্তীতে তা যাছাই-বাছাইয়ের জন্য প্রেরন করে থাকেন। এখানে আমরা (এনটিআরসিএ) শুধু কেউ এনটিআরসিএ’র সনদ যাছাই করতে চাইলে তা আমরা যাছাই করে থাকি। জাল সনদের বিষয়টি দেখভাল করেন মাউশি’র নিরীক্ষা বোর্ড।”
এদিকে শিক্ষক শামীম ভূইয়া বলেন, আমি নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার সময় সনদপত্র প্রদর্শনের করতে হয় নাই। অর্থাৎ অনলাইনে আসার পূর্বেই আামার নিয়োগ হয়। ফলে আমার এনটিআরসি নিবন্ধন সনদ প্রদর্শন করার প্রয়োজন নাই।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ডটকম একটি ফালতু জিনিস। এরা অহেতুক ঝামেলার সৃষ্টি করে যায়। বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক হারুন অর রশিদকে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাক্কারুল ইসলাম জানান, “এ বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আর এটা মাউশি দেখার বিষয়।”
ময়মনসিংহের জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে বিষয়টি কথিয়ে দেখা হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জাল সনদের চাকুরীর বিষয়ে তালিকা প্রকাশ হয়েছে আরও পক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে জাল সনদ সংক্রান্ত বিষয়ের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
কেএস