রাত পোহালেই রংপুর সিটিতে ভোটগ্রহণ

মিজানুর রহমান মিজান, রংপুর ব্যুরো প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৬, ২০২২, ০৭:৫৩ পিএম

রাত-পোহালেই রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন ঘিরে নেয়া হয়েছে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পাশাপাশি নির্বাচনে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

নির্বাচনকে ঘিরে রংপুর মেট্রো পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রচুর সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সদস্য পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

শেষ মুহূর্তে চলছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন সহ (ইভিএম) ভোটের উপকরণ পৌঁছানোর কাজ। রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ থেকে সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে এসব উপকরণ ২২৯টি কেন্দ্রে পাঠানো শুরু হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন আনুষ্ঠানিকভাবে এসব পাঠানোর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

এসময় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশন নূরে আলম মিনা, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরীসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময়  উপকরণ বিতরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন। বিতরণ কেন্দ্র থেকে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের কাছে ভোটের উপকরণ বুঝিয়ে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেসব উপকরণ পুলিশি প্রহরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নির্ধারিত কেন্দ্রে।

আবদুল বাতেন বলেন, ‘ইভিএমের কারিগরি ত্রুটির কারণে ভোটগ্রহণে যেন কোন অসুবিধা না হয় সেই কারণে আমাদের বাড়তি ইভিএম আছে। যদি কোনো সমস্যা হয়, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তা রিপ্লেস করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভোটগ্রহণ করবেন তাদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি, আমরা বলে দিয়েছি তারা যেন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্বপালন করেন। কোন অনিয়ম হলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা নগরবাসীকে এবং ভোটারদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই। আগামীকাল তারা একেবারেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন এবং কেন্দ্রে গিয়ে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।

নিরাপত্তা ইস্যুতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে প্রচুর সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সদস্য পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে চারজন পুলিশ সদস্য এবং আনছারসহ ১৫ সদস্য থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন সদস্য থাকবে। নারী ভোট কেন্দ্রে নারী পুলিশ সদস্য ছাড়াও আনসার সদস্য থাকবেন। কেন্দ্রের ৪শ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

তিনি বলেন, ‘ভোটার এবং অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া ওখানে কেউ যেতে পারবেন না। ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩টি মোবাইল টিম, ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটের নেতৃত্বে ৩৩টি অতিরিক্ত মোবাইল টিম (ভ্রাম্যমাণ আদালত) কাজ করবে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রিটের অধীনে ১১টি স্টাইকিং ফোর্স থাকছে বিজিবির। এ ছাড়াও র‌্যাবের ১৭টি টিম মাঠে থাকবে। আমি মনে করি খুব জোরালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এবারে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এ বছর মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ প্রার্থী। তবে ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফিজার রহমান মোস্তফা। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলনের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন নগরবাসী।

অন্যপ্রার্থীদের নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই ভোটের মাঠে। নির্বাচনে ২শ ২৯টি কেন্দ্রে ২শ ২৯ জন প্রিজাইডিং অফিসারের পাশাপাশি ১১ সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, এক হাজার ৩শ ৪৯ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, দুই হাজার ৬শ ৯৮ পোলিং অফিসার হিসেবে মোট চার হাজার ২শ ৭৬ জনকে নিযুক্ত করা হয়েছে। এবার দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ নারী ভোটার ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এআই